1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৪ অপরাহ্ন

খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে নতুন আবেদন করা হচ্ছে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার স্বাস্থ্যের চরম অবনতি হয়েছে। জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি। যতদ্রুত সম্ভব তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় নিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় নতুন করে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হবে বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন। আজ অথবা আগামীকাল মঙ্গলবার মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন করা হতে পারে বলে তারা জানান।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা এতদিন অপেক্ষা করেছি, সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন করেছি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নিবেদন করেছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকার এ বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি। খালেদা জিয়ার আত্মীয়স্বজনরা সম্প্রতি তার সাথে দেখা করে এসে বলেছেন, তার অবস্থার দিন দিন অবনতি হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়া একটা বৃহৎ রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। এ অবস্থায় তাকে আমরা মরে যেতে দিতে পারি না। সে জন্য আমরা আইনজীবীরা, আদালতে আবেদন করব। বার বার জামিন আবেদন করব। আদালত কী করবেন সেটা আদালতের বিষয়। বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নিয়ে আমরা আবার আদালতের কাছে যাবো। আমরা বারবার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করতে পারি। এ ক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এবং স্বাস্থ্যগত বিষয় জামিন আবেদনে প্রাধান্য পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আপিল বিভাগে জামিন আবেদনের সময় বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত যে অবস্থা ছিল; এখন আরও অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দিনে দুই তিন বার ইনসুুলিন দেয়ার পরও তার ডায়াবেটিস কন্ট্রোল হচ্ছে না। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ, কিডনি বা অন্য স্থানে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বসতেও পারেন না, শুতেও পারেন না।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি তাকে জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে নতুন একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে। আগে তাকে বাঁচাতে হবে। পিওর মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে আমরা হাইকোর্টে জামিন চাইবো। আশা করি মঙ্গলবার আমরা জামিনের দরখাস্ত করতে পারব এবং হাইকোর্ট বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পথে প্রধান অন্তরায় এবং বাধা হচ্ছে সরকার। সরকারের ইচ্ছার কারণে তার কারাজীবন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ যেদিন খালেদা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন পান, ওই দিনই তার মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে এখনো পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। সমস্ত কিছু করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে। খালেদা জিয়া যাতে এই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে দাঁড়াতে না পারেন সে জন্য তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, জামিনের জন্য যেসব বিষয় আদালত বিবেচনায় নিয়ে থাকেন তার প্রত্যেকটাই তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তিনি অসুস্থ, একজন বয়স্ক মহিলা, তার বয়স এখন ৭৫। অসুস্থ হয়ে তিনি পিজিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক সেনাপ্রধান ও সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী। সামাজিক অবস্থানের ক্ষেত্রেও জামিনের যে শর্ত হয়, সমস্ত শর্ত তিনি পূরণ করেছেন। কিন্তু তিনি শুধু রাজনৈতিক কারণে মুক্তি পাচ্ছেন না। ইতঃপূর্বে তিনি ন্যায়বিচার বঞ্চিত হলেও আইন যদি তার নিজস্ব গতিতে চলে তাহলে আগামী দিনে যখন আমরা জামিন আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে যাবো, আদালত উনার স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় নিয়ে মানবিক কারণে জামিনের আবেদনের শুনানি করবেন এবং তাকে জামিন দেবেন বলে আমরা আশা করি যাতে তিনি উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। চলতি সপ্তাহে তার পক্ষে জামিন আবেদন করা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার যদি আন্তরিক হয়, তাহলে অ্যাটর্নি জেনারেল এবার অন্তত খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে বিরোধিতা করবেন না।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্ট।

আপিল বিভাগের আদেশের পর ওই দিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা নতুন করে জামিন আবেদন করা হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন।
তবে খালেদা জিয়ার কারামুক্তির জন্য আরও একটি মামলায় জামিন নেয়ার প্রয়োজন হবে। এটি হলো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা। ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে। এই মামলায় দু’টি ধাপ ইতোমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে। নি¤œ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়ের করা আপিলে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়, যা আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আছে। এই মামলায় আপিল বিভাগ থেকে তাকে জামিন নিতে হবে।

কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সর্বোমোট ৩৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিন নেয়া বাকি রয়েছে। এ ছাড়া অন্যসব মামলায় তিনি জামিনে আছেন।

গত ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ চার আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করে দুদক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com