সাতাশ বছর আগে নওগাঁর বদলগাছীর কেশাইল গ্রামের হাশেম রেজা ওরফে টগর চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৬ আসামিকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তাদের মধ্যে যারা কারাবন্দি আছেন তাদের মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেন।
আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সারোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- আশরাফুল, আবুল কাশেম, আকবর আলী, তসলিম উদ্দিন, ইয়াকুব আলী, নুরুল আলম খোকন, নুরুল হুদা, নুরুজ্জামান, পিন্টু ওরফে পিটু, মঞ্জু, বাচ্চু, মোয়াজ্জেম, আয়নাল হক, লাজাব, এনামুল ও খাজামুদ্দিন।
এদের মধ্যে নুরুল আলম খোকন, নুরুল হুদা, নুরুজ্জামান, আবুল কাশেম ও ইয়াকুব আলী এরইমধ্যে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
রায়ের পর অ্যাডভোকেট সারোয়ার আহমেদ জানান, এই মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ১৬ জন আপিল বিভাগে আপিল করেছিল। আপিল বিভাগ এদের সকলকেই খালাস দিয়েছেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ জানান, ১৬ জনের আপিলের ওপর বিচার হয়েছে। আদালত তাদের আপিল মঞ্জুর করেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, বদলগাছীর কেশাইলের শ্যামহার দিঘীতে মাছের পোনা ছাড়া ও দিঘীর পাড়ে কলা গাছ লাগানো নিয়ে ১৯৯৪ সালের ৩ জুন টগর চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন রাতেই নিহতের ভাই আবুল হাসনাত চৌধুরী বদলগাছী থানায় মামলা করেন। বিচার শেষে নওগাঁ অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ২০০৫ সালের ১০ জুলাই এক রায়ে ডা: নুরুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৮ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে নুরুল ইসলামসহ ১৮ আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন। ওই আপিল শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্ট নুরুলের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেন। অপর ১৭ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এরপর রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নিয়ে ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি পান ডা: নুরুল ইসলাম। যদিও তিনি গত ১৪ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। বাকি ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জন আপিল বিভাগে আপিল করেন। আপিলকারী সকলকেই খালাস দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
সূত্র : ইউএনবি
Leave a Reply