ঈশ্বরদীতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে পৌর যুবদলের নবগঠিত ৪২ সদস্যর আহ্বায়ক কমিটি থেকে গণহারে নেতারা পদত্যাগ করছেন। গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত মোট ২৪ জন নেতা কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এদের মধ্যে আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়ক আছেন ৯ জন।
জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে পাবনা জেলা যুবদলের সভাপতি মোসাব্বির হোসেন সঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক হিমেল রানার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির ২৪ সদস্য। পদত্যাগকারীরা হলেন- কমিটির আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল, যুগ্ম-আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম জিতু, রাশেদুল ইসলাম রিপন, শামীম আক্তার রতন, রেজাউল হক মুকুল, আবু জাহিদ উজ্জ্বল, আসাদুজ্জামান আসাদ, সেলিম চৌধুরী, সাইদুল ইসলাম, মাহাবুবুর রহমান রিয়াদ, রফিকুল ইসলাম তুহিন, আহবায়ক কমিটির সদস্য কিরণ সরদার, হাফিজুর রহমান হাফিজ, নূর মোহাম্মদ স্বপন, সাইফুল ইসলাম ফয়েজ, মোহাম্মদ শওকত আলী, সদস্য, সাইদুর ইসলাম, সাহিদুর রহমান সাহেদ, সোহেল রানা পাখি, মুশফিকুর রহমান মিশন, রবিউল ইসলাম রাজু, জুবায়ের ফারুক রাজিব, মোহাম্মদ শেখ রিঙ্কু, ও মো. সুমন।
নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির পদত্যাগকারী আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গত ২ মে বিএনপি যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত ঈশ্বরদী পৌর যুবদলে আমাকে আহ্বায়ক ও একেএম সাজেদুজ্জামান জিতুকে সদস্য সচিব করে ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের একটি কমিটি সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। আবার ওই রাতেই ঘোষিত কমিটি বাতিল করে আমাকে আহ্বায়ক ও আলী জুবায়ের প্রতীককে সদস্য সচিব করে ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এই পকেট কমিটি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি।’
জুয়েল আরও বলেন, ‘গত ৫ মে ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এ কমিটি ৭ দিনের মধ্যে বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষণার দাবি জানাই। পাশাপাশি কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও পাবনা জেলা যুবদলের নেতৃবৃন্দের কাছে বিয়টি জানাই। কিন্তু ৭ দিনের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও দলের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। তাই আমরা ৪২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির ২৪ জনই একযোগে পদত্যাগ করেছি।’
জাকির হোসেন জুয়েল আরও বলেন, ‘বিগত আন্দোলন-সংগ্রামের যেসকল নেতাকর্মীরা রাজপথে ছিলেন। যারা জেল, জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছেন। তাদেরকে এই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি। অথচ যাদের আন্দোলন-সংগ্রামে কখনও দেখা যায়নি, যারা দীর্ঘদিন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেই- এমন ব্যক্তিদের কমিটিতে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতার ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করা পদত্যাগের অন্যতম কারণ।’
পদত্যাগের ব্যাপারে অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েও পারা যায়নি। অনেকে বলছে, বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত হওয়ায় এ ব্যাপারে কথা বলতে চান না তারা।
তবে বিষয়টি নিয়ে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘এটা যুবদলের বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। যারা আজ কমিটি নিয়ে হইচই করছে তারা কাদের কথায় চলে, কাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চায় এটা সবাই জানে।’
পাবনা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হিমেল রানা বলেন, ‘২৪ জনের পদত্যাগের আবেদনপত্র পেয়েছি। আমরা আলাপ আলোচনা করে এ ব্যাপারে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।’
Leave a Reply