মিশরের মধ্যস্থতায় নেওয়া ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এরপর পরই হোয়াইট হাউসে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এমন সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউসে দেওয়া বক্তব্যে বাইডেন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়া ভালো সুযোগ রয়েছে। আমি এ নিয়ে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ এ সময় ইসরায়েল ও হামাসকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে মিসরের মধ্যস্থতার প্রশংসা করেন বাইডেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, টানা ১১ দিন গাজায় সহিংসতা চালানোর পর মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইহুদি দেশ ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র দল, গাজা, হামাস এবং ইসলামিক জিহাদও যুদ্ধবিরতিতে রাজি।
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে- মিশরের প্রস্তাবে আমরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত। এই যুদ্ধবিরতি হবে পারিস্পরিক ও নিঃশর্ত।
হামাস বলেছে, আল-আকসা ও জেরুজালেমের শেখ জারায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের প্রতিশ্রুতি পেয়ে তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। অবশ্য ইসরায়েলের সিদ্ধান্তকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছে হামাস। হামাসের এক মুখপাত্র কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, ‘ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বিজয় হয়েছে।’
এদিকে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান মিসরকে জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক রিগেভ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট শর্তেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে। সে শর্তে তেলআবিব ও জেরুজালেমে হামলা বন্ধ করতে হবে হামাসকে। গাজা থেকে রকেট হামলার কারণে সেখানকার বেসামরিক নাগরিকরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
বিরতীর ঘোষণা দেওয়ার আগে গত রাতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তার জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যুদ্ধবিরতি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হবে। অর্থাৎ আজ শুক্রবার থেকেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে বৃহস্পতিবার। ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডে মানবিক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করায় বিশ্বের পরাশক্তিগুলো উভয়পক্ষকে যুদ্ধে বিরতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
২০১৪ সালের পর এটাই ছিল দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। গাজায় সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৫ শিশু এবং ৩৬ নারী আছেন। অপরদিকে হামাসের হামলায় ১২ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন।
Leave a Reply