সৌদি আরবে ফিরতে হলে মানতে হবে ৭ দিনের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা। তা না হলে দিতে হবে বড় অঙ্কের জরিমানা। সংখ্যাটা সৌদি মূদ্রায় ৫ লাখ রিয়াল হলেও বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমান দাঁড়ায় এক কোটি ১৩ লাখ (প্রতি রিয়াল ২২.৬০ টাকা ধরে)। রয়েছে পাঁচ বছরের জেল, এ ছাড়া একেবারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে নিজ দেশে। সৌদি থেকে বের করে দেওয়ার পর কোনো ব্যক্তিকে দেশটিতে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। অবশ্য, সৌদি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে একটা ‘যদি’ আছে। যদি কেউ সাধারণ জনগণে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেয় সে ক্ষেত্রে এসব শাস্তি কার্যকর হবে।
জেল-জরিমানার বিধান ছাড়াও কিছু নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে বাংলাদেশিদের জন্য অন্যতম হলো- কোনো প্রবাসী (বাংলাদেশিসহ) দেশটিতে ফিরলে তাদের সাত দিন নিজ খরচে নির্ধারিত হোটেলে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। সৌদি আরবে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে ঢাকা থেকে ফ্লাইটে যাত্রীকে বোর্ডিং ইস্যু করা যাবে। সৌদিতে পৌঁছানোর পর যাত্রীকে দুবার করোনা টেস্ট করতে হবে। প্রথমবার করতে হবে সৌদি আরবে পৌঁছানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ও পুনরায় ষষ্ঠ দিনে আবারও করোনা টেস্ট করতে হবে। টেস্ট করার খরচ যাত্রীকেই বহন করতে হবে। দুবার করোনা টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে হোটেল কোয়ারেন্টিন থেকে সপ্তম দিনে বাসায় যাওয়ার অনুমতি মিলবে। একই নির্দেশনা বাংলাদেশি ছাড়া অন্যান্য দেশের প্রবাসীদের জন্য কার্যকর হবে।
যেসব যাত্রী ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাদের জন্য সৌদি প্রশাসনের নির্দেশনা হলো- টিকা গ্রহণের প্রমাণ পত্র সবসময় সঙ্গে রাখতে হবে। তবে যারা ফাইজার-বায়োএনটেকের ২ ডোজ, অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২ ডোজ, মডার্নার ২ ডোজ এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার ১ ডোজ নিয়েছেন, তারা হোটেলের পরিবর্তে নিজ নিজ আবাস্থলে কোয়ারেন্টিনের সুবিধা পাবেন। গত ১০ মে সৌদি আরবের জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশন বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে এসব তথ্য জানানো হয়। পরে সৌদিগামী যাত্রীদের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য হোটেল বুকিং এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে করার নির্দেশনা দেয় জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশন।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত সৌদি আরবের সঙ্গে বিমানের সব ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
সব মিলিয়েই বিপাকে পড়েছেন দেশে ও সৌদি আরবে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। নতুন এ ঘোষণায় অনেকেই ফিরতে পারছেন না। জেল-জরিমানা ও একেবারে দেশে ফেরতের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা শিথিলের দাবি জানিয়েছে প্রবাসীরা। অন্তত বাধ্যতামূলক হোটেল কোয়ারেন্টিন বাদ দিয়ে নিজ নিজ আবাসস্থলে কোয়ারেন্টিন চাচ্ছেন তারা।
Leave a Reply