যশোর-খুলনার নয়টি সরকারি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ থাকায় কাঁচামালের সরবরাহ বাড়ার কথা থাকলেও ফল হয়েছে উল্টো। কাঁচাপাট সঙ্কটের কারণে খুলনার বেসরকারি ১৭ পাটকলের উৎপাদনের চাকা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কাঙ্খিত উৎপাদন না হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য, চীন ও ভারতের বাজার হারাতে বসেছে বাংলাদেশ।
পরপর তিন বছর কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় ফরিদপুর, শরীয়তপুর, যশোর ও সাতক্ষীরার চাষিরা পাট উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে । গেলো মৌসুমে বন্যা ও আম্পানের কারণে পাট উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বাজারে কাঁচাপাটের সংকট দেখা দেয়। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোকাম দৌলতপুরে প্রতি মণ পাট দুই হাজার ৪০০ টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচাপাটের মূল্য বেশি থাকায় উৎপাদন সংকটে পড়েছে ফকিরহাটের জয় জুট, মুনস্টার, এএমএম জুট, রূপসার সালাম, ওহাব, ডুমুরিয়ার শাহ চন্দ্রপুরী, বটিয়াঘাটার হাবিব জুট, দিঘলিয়ার সাগর জুট, জুট টেক্সটাইল, ফুলতলার আইয়ান জুট, সুপার জুট, মিশু জুট, এফআর জুট ও যশোর জুট প্রডাক্টস। ফকিরহাটের এএমএস জুট ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়েছে।
পাট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সুপার জুট মিল পাট কিনতে পারছে না। উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। তাদের উৎপাদন খরচ হচ্ছে না। বেসরকারি পাটকলগুলোর টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হচ্ছে।
পাট অধিদপ্তর খুলনার মুখ্য পরিদর্শক সরজিৎ সরকারের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেসরকারি পাটকলগুলো পাট কিনছে কম। এমনিতেই তাদের হাতে পুঁজির সংকট। কাঁচাপাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় পাটকলে পাটের সংকট দেখা দিয়েছে। ৩৬ বছরে এমন সংকট কখনো হয়নি। ২০১৯ সালে কাঁচাপাটের মূল্য ছিল মন প্রতি দুই হাজার ৪০০ টাকা।সেখানে এ মৌসুমের মূল্য মণ প্রতি পাঁচ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে রূপসাস্থ সালাম জুট মিলের ম্যানেজার বশির আহমেদ জানান, প্রতিদিন এ প্রতিষ্ঠানে ১৬ মেট্টিক টন কাঁচাপাটের প্রয়োজন ছিল। সোমবার ও মঙ্গলবার কোনও সরবরাহ নেই। উৎপাদন কমে গেছে। এক সপ্তাহ আগেই শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দেয়া হয়েছে।
তার দেয়া তথ্য মতে, মধ্যপ্রাচ্য, তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে চট ও সুতার বাজার সংকুচিত হয়েছে। মিসর ও চীনে অল্প-স্বল্প রপ্তান হচ্ছে।
সূত্র : ইউএনবি
Leave a Reply