1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন

পরকীয়ার অভিযোগে জুতার মালা পরিয়ে গৃহবধূ ও যুবককে নির্যাতন, ঘরে তালা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১

পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ তুলে এক নারী ও যুবককে জুতাপেটা করে জুতার মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তাদের ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি থেকে বেরও করে দেওয়া হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার সুতারকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ কয়দিন ঘটনা গোপন থাকলেও পরবর্তীতে জানাজানি হয়ে যায়।

এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয় রাজৈর থানায়। সালিস বসিয়ে নারী ও যুবককে জুতার মালা পরানো, গ্রামব্যাপি ঘোরানো ও ঘর থেকে বের করে দেওয়ায় পুলিশ তিন সালিসকারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর গ্রামের এক ব্যক্তির (৩৮) সঙ্গে রাজৈর উপজেলার সুতারকান্দি গ্রামের এক গৃহবধূর (৪৬) পরিচয়ের সূ্ত্রে উভয়ের বাড়ি যাতায়াত ছিল। গত ১৯ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ওই যুবক সুতারকান্দি গ্রামে বেড়াতে আসে। কিছুক্ষণ পরে একই বাড়ির কালু ফকির, ইমরান ফকির, শাকিব আকন, রানা ফকির, শামীম ফকিরসহ ৮/১০ জন মিলে তাদের দুইজনকে বেঁধে ফেলে বাড়ির উঠানে সালিস বসায়। পরে সালিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই ব্যক্তি এবং গৃহবধূকে ১০০ বার করে জুতাপেটা করা হয় এবং তাদের জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘুরানো হয়। পরে ঘরে তালা ঝুলিয়ে ওই গৃহবধূর পরিবারকে এলাকা থেকে বের করে দেওয়া হয়।

গত শনিবার রাতে সালিসে উপস্থিত কালু ফকির, ইমরান ফকির, শামীম ফকিরসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৮/১০ জনে রাজৈর থানায় মামলা দায়ের করেছে ওই গৃহবধূর স্বামী। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কালু ফকির, আজিজুল ফকির ও শাকিব আকনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বলেন, ‘ওরা আমাকে ও আমার ভাইকে জোর করে বেঁধে সবার সামনে ১০০ জুতার বাড়ি দিয়েছে। জুতার মালা পরিয়ে সারা গ্রাম ঘুরিয়েছে। আবার আমার ঘরে তালা দিয়েছে। এখন ভয়ে নিজের বাড়ি যেতে পারছি না।’

এলাকার ইউপি সদস্য তারা মিয়া বেপারী বলেন, ‘ধর্মের ভাই-বোনকে বিচারের নামে প্রহসনের সালিস বসায়। সালিসে আমার কোনো কথাই তারা শোনেনি। এমনকি ওই নারীর কোনো কথা না শুনে কালু ফকির, ইমরান ফকির, শামীম ফকির, রানা ফকির নিজেদের ইচ্ছেমত রায় ঘোষণা করে।’

বাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ‘কাজটি যারা করেছে, যারা আইন হাতে তুলে নিয়েছে, তাদের এবং এর পেছনে ইন্ধনদাতাদের বিচার হওয়া উচিৎ।’

ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করছি। তার চরিত্র খারাপ হলে আমি আগে জানতাম। আমার স্ত্রী অপরাধ করে থাকলে আমি বিচার করতাম। উনারা কেন আমার স্ত্রী ও আমার আত্মীয়কে এভাবে অপমান করলো। তারা ঘরে তালা দিয়ে বের করে দিয়েছে। এখন আমরা ঘরে যেতে পারছি না। আমাদের ছেলে মেয়ে আছে। তাদের বিয়ে দিয়েছি। নাতি-নাতনি রয়েছে। আমরা কীভাবে মানুষের মুখ দেখাব। আমি এর বিচার চাই।’

সালিসের নেতা কালু ফকির বলেন, ‘ওই মহিলা খুবই বাজে চরিত্রের লোক। তাই একটু শাসনের জন্য সালিস করা হয়। সালিসে অনেক মাতুব্বর ছিল। তারা সবাই মিলে এ রায় দেয়।’

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদী বলেন, ‘তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। বাকি আসামিদের ধরার জন্য তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com