করোনা ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় দফা আক্রমণে ভারত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পহেলা এপ্রিল থেকে প্রতিদিনই দেশটিতে নতুন করে ৯০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। গত সপ্তাহ থেকে সেটি লাখের ঘর ছাড়িয়েছে- এ মাত্রা প্রথম দফা সংক্রমণেও অতিক্রম করেনি। এমন পরিস্থিতিতে জনবহুল এ দেশটি টিকার সংকটে পড়তে যাচ্ছে। সংকট এতটাই প্রকট যে, করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাজ্য মহারাষ্ট্রের ৭০টির বেশি টিকাদানকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর এনডিটিভি ও বিবিসি।
রাজ্য সরকার টিকার সংকটের কথা বললেও কেন্দ্রীয় সরকার বলছে তাদের হাতে পর্যন্ত টিকা মজুদ রয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিন দিনের মধ্যে টিকার চালান না এলে টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে আমরা বাধ্য হব।’ তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, তাদের কাছে পর্যাপ্ত টিকার মজুদ রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘টিকার ঘাটতি নিয়ে যেসব বক্তব্য আসছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’ ভারতের কাছে মজুদ ও শিগগিরই হাতে পাওয়ার মতো মিলে মোট ৪ কোটি ৩০ লাখের বেশি ডোজ টিকা আছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি উল্টো অভিযোগ করেন, ‘বিভিন্ন রাজ্য সরকার তাদের দুর্বল টিকাদান কর্মসূচির দায় এড়ানোর জন্যই এসব অজুহাত দিচ্ছে।’
খবরে বলা হয়েছে, মুম্বাইয়ে টিকাদানের জন্য ১২০টি কেন্দ্র পরিচালনা করা হচ্ছিল। তবে টিকা সংকটের কারণে এর ৭১টিই বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (বিএমসি)। এর ৪৯টি পরিচালনা করছে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার ও বিএমসি। এর প্রতিটিতে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। বিকেসি এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া কেন্দ্রের ডিন রাজেশ ডেরে বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই আমরা পরবর্তী দিনের জন্য অগ্রিম টিকার ডোজ মজুদ রাখতে পারতাম। গতকাল পর্যন্ত আমরা এ কেন্দ্রের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক ডোজ পেয়েছি।
গত রাতে আমরা আশা করেছিলাম আজকের ডোজগুলো পেয়ে যাব, কিন্তু তা পৌঁছায়নি। এখন আমাদের কাছে মাত্র ১৬০ ডোজ টিকা আছে। গতকাল শুক্রবার মুম্বাইয়ের মেয়র কিশোরি পান্ডেকর বলেন, ‘বেশ কয়েকটি টিকাদান কেন্দ্রে একটি ডোজও নেই। সে কারণে টিকাদান বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। জানতে পেরেছি ৭৬ হাজার থেকে এক লাখ ডোজ টিকা আজ মুম্বাইয়ে পৌঁছাবে, কিন্তু এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য নেই।’
Leave a Reply