তারা দোকান খুলবে। গতকাল ব্যবসায়ী সমিতির বৈঠকে লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী কেঁদে ফেলেন। সিলেট মহানগরে ব্যবসায়ী সমিতির তালিকাভুক্ত এবং তালিকাভুক্তির বাইরে রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার ব্যবসায়ী। সরকার লকডাউনের ঘোষণা দেয়ার পর সোমবার থেকে সিলেটের ব্যবসায়ীরা বিধিনিষেধ পালন করছেন। তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন। এই অবস্থায় গত মঙ্গলবার সাধারণ ব্যবসায়ীদের ব্যানারে কয়েকশ’ ব্যবসায়ী নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলার দাবি জানান তারা। সিলেট জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আলহাজ মকন মিয়া জানিয়েছেন, দোকান খুললে ব্যবসায়ীরা ভ্রাম্যমাণ আদালত কিংবা জরিমানার মুখে পড়তে পারেন। এতে নতুন করে ব্যবসায়ীরা অসন্তুষ্ট হতে পারেন। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা দোকান বন্ধ রাখার সিদ্বান্ত নিয়েছি। এখন যে সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছে সেটি পালন করা হবে। এদিকে, লকডাউনেও সিলেটের সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। নগরীর কালিঘাট হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের পাইকারি আড়ত। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা থাকছে এই আড়ত এলাকা। মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। একই দৃশ্য নগরীর সুবহানীঘাটের কাঁচাবাজার এলাকারও। বাইরে থেকে আসা সবজি এখানে বিক্রি হচ্ছে। তবে, স্বাস্থ্যবিধি পালন নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সিলেটের যানবাহনেও স্বাস্থ্যবিধি পালনের কোনো বালাই নেই। গতকাল থেকে গণপরিবহন চলছে। সিলেট নগরী ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা সড়কেও যানবাহন চলছে। এতেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। সিলেট নগরীতে মার্কেট ছাড়া সবকিছুই স্বাভাবিক। এ কারণে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ বেড়েছে। ব্যবসায়ী সমিতির বৈঠক শেষে সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন মানবজমিনকে জানিয়েছেন, এই লকডাউন মনে হচ্ছে শুধু ব্যবসায়ীদের জন্য। এ কারণে বৈঠক করে রোববার থেকে মার্কেট ও বিপণি বিতান খোলা রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর আগে আগামী শনিবার সিলেটের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করতে চান। রমজান সামনে। তার জন্য একটি প্রস্তুতি প্রয়োজন। ব্যবসায়ীরা ঈদের কেনাকাটার প্রস্তুতি নিতে পারছেন না। এ কারণে তারা সরকারকে ব্যবসায়ীদের প্রতি নমনীয় হওয়ার দাবি জানান। সিলেটের হাসান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হাজী রইছ আলী জানিয়েছেন, সিলেটের ব্যবসায়ীরা শান্তিপ্রিয়। এ কারণে প্রশাসন ও চেম্বারের সঙ্গে বৈঠকে যে সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছিল সেটি তারা পালন করছেন। দ্বিতীয় দফা লকডাউনের আগে ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দিয়েছেন দোকানপাট খোলা রাখবেন। এজন্য সরকারকে বিষয়টি বিবেচনার দাবি জানান তিনি। সিলেটের বন্দরবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জয়নুল হোসেন জানিয়েছেন, সিলেটের ব্যবসায়ীদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ব্যবসায়ীরা গত বারের লকডাউনে মূলধন ভেঙে খেয়েছেন। এবার ঘুরে দাঁড়ানোর মূহূর্তে দেয়া হয়েছে লকডাউন। এখন ব্যবসায়ীদের রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো গতি নেই। সুতরাং, দ্বিতীয় দফা লকডাউন দিলে সিলেটের ব্যবসায়ীরা সেটি মানবেন না। রোববার থেকে দোকান খোলা রাখবেনই।
Leave a Reply