মিয়ানমারে ফের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন গতকাল সোমবার এ তথ্য জানায়। এদিকে, দেশটিতে বেসামরিক জনগণের এই অব্যাহত প্রাণহানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এক বিবৃতিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে এবং দ্বিপক্ষীয় চেষ্টার মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই দমন-পীড়ন বন্ধের উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে সোমবার আরও ২০ জনকে হত্যার খবর নিশ্চিত করেছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি) নামে একটি সংগঠনও। সিএনএন জানায়, মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হাখাসহ বেশ কয়েকটি শহরে কারাবন্দি নেত্রী অং সান সু চির সমর্থকরা গতকাল সোমবার সমাবেশ করে। মধ্যাঞ্চলীয় মাইংইয়ান ও অংলান শহরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি চালায়। এতেই হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল গত রোববার। এদিন বিক্ষোভের মধ্যে ৩৯ জনতে হত্যা করা হয়। কিন্তু এএপিপি বলছে, মোট ৭৪ জন নিহত হয়েছেন। শুধু হ্লাইংথায়ায় ২২ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটেছে। ইয়াঙ্গুনের হ্লাইং থারিয়ার এলাকায় রোববার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছুরি ও লাঠি হাতে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর সংঘর্ষ শুরু হলে তাদের ওপর গুলি ছোড়ে নিরাপত্তাবাহিনী। এতে ২২ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া দেশটির অন্যান্য শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন একজন পুলিশ সদস্য।
এএপিপির এক প্রত্যক্ষদর্শী একজন সাংবাদিক বলেন, ‘এটা ভয়ঙ্কর। আমি চোখের সামনে গুলি করে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে দেখেছি। এমন নৃশংস দৃশ্য জীবনে ভুলতে পারব না।’
যদিও নিজের নাম প্রকাশ করতে বারণ করেছেন ওই সাংবাদিক, তার তিনি এএপিপিকে বলেছেন, ‘চোখের সামনে গুলি করে পাখির মতো মানুষ মেরে ফেলছে জান্তা সরকারের লোকজন (পুলিশ-সেনা)।’
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, হ্লাইংথায়াসহ দুটি এলাকায় সামরিক আইন জারি করেছে জান্তা সরকার।
Leave a Reply