কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরায় প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার মেন’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি সব অনলাইন মাধ্যম থেকে সরাতে পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসিকে দেওয়া নির্দেশসংবলিত হাইকোর্টের লিখিত আদেশ গতকাল সোমবার প্রকাশ হয়েছে। ৩৭ পৃষ্ঠার এ আদেশে আল জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদন সব অনলাইন প্ল্যাটফরম থেকে ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ যেন সরিয়ে ফেলে এবং পুনরায় আপলোড না করে সে বিষয়ে তাদের অনুরোধ জানাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, রাষ্ট্রের প্রধান, সরকারপ্রধান ও সেনাবাহিনীপ্রধানের বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে তার মাধ্যমে এ মাটির সন্তান হিসেবে আমরা বিস্মিত ও অপদস্থ হয়েছি। কিন্তু গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত সংবাদটি অনলাইন প্ল্যাটফরম থেকে সরাতে সরকারের যথাযথ দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখিনি।
এর আগে বাংলাদেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ এবং প্রচারিত ওই প্রতিবেদন ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুকসহ সব অনলাইন প্ল্যাটফরম থেকে সরানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট নিষ্পত্তি করে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশ দেন। আদালত আদেশে বলেন, জনস্বার্থে এই রিট করা হয়েছে, কিংবা কীভাবে তার মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন রিটকারী। তবে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, দেশের সমাজব্যবস্থা এবং দেশের ভাবমূর্তির কথা বিবেচনা করে আদালত তার বিশেষ ক্ষমতাবলে বিটিআরসির প্রতি এ আদেশ দিচ্ছে।
আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ৬ অ্যামিকাস কিউরি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল, অ্যাডভোকেট কামালুল আলম, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, প্রবীর নিয়োগী ও ড. শাহদীন মালিক, রিটকারী ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন এবং বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই রাকিবের বক্তব্য শুনে আদেশ দেন।
‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার মেন’ শিরোনামে গত ১ ফেব্রুয়ারি আল জাজিরায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন ৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট দাখিল করেন। প্রধানমন্ত্রী, সেনাপ্রধানসহ অন্যদের জড়িয়ে করা ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার মেন’ শিরোনামে প্রতিবেদন ভিত্তিহীন উল্লেখ করে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর), পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন মহল থেকেও প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
Leave a Reply