1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন

টিকায় বদলে গেছে চিত্র

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৮ মার্চ, ২০২১

করোনা ভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় বিশ্বের যে কয়টি দেশ টিকাদান সাফল্যে এগিয়ে আছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রথম টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করে। দেশজুড়ে গণটিকাদান শুরু হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। বর্তমানে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ টিকা দেওয়া হচ্ছে। তাতেই বদলে গেছে করোনা সংক্রমণের চিত্র। কমে এসেছে রোগী শনাক্তের হার। এখন পর্যন্ত টিকায় বড় ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। পাওয়া যায়নি কোনো মৃত্যুর খবরও। বহুল কাঙ্ক্ষিত এ টিকা তৈরি করেছে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পথ।

কয়েক মাস আগেও যেখানে করোনায় আক্রান্তে শনাক্তের হার ছিল ২০ থেকে ২২ শতাংশ, সেখানে তা নেমে এসেছে ৪ শতাংশে। বিশেজ্ঞরা বলছেন, করোনা শনাক্তের হার কমে যাওয়ার পেছনে টিকাদান কার্যক্রম বড় অনুসঙ্গ হিসেবে কাজ করছে। যত বেশি মানুষ টিকা নেবে তত দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আসবে করোনা সংক্রমণ। তবে এ সাফল্য ধরে রাখতে হলে শুধু টিকা গ্রহণ করলেই চলবে না, মানুষকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে।

ভারত থেকে আনা ‘কোভিশিল্ড’ টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে শুরুতে দেশে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের গুজব, আলোচনা-সমালোচনা দানা বাঁধে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সবার আগে সেই টিকা নেওয়ার দাবি জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এতে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরুর পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শঙ্কায় মানুষের মধ্যে আগ্রহ কম দেখা যায়। তখন সরকারের মন্ত্রী, এমপি, সচিবসহ সরকার ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সেই টিকা নিয়ে লোকজনের আগ্রহ বাড়িয়ে দেন। ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। যেখানে সম্মুৃখ সারির পাঁচজন প্রথম টিকা নেন। শুরুটা হয় হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে দিয়ে। ওই কার্যক্রম উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন, দেশের মানুষকে টিকা দিয়ে তিনি গ্রহণ করবেন। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীও টিকা নিয়েছেন।

সারা দেশে গত ৭ জানুয়ারি গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিকে মহামারী মোকাবিলার সম্মুখযোদ্ধাদের সুযোগ দেওয়া হয়। সঙ্গে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করতে দেওয়া হয়। পরে সেই বয়সসীমা কমিয়ে করা হয় ৪০ বছর। আর টিকার নিবন্ধনের জন্য সরকার ‘সুরক্ষা’ নামে একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করে। পরে চালু করা হয় ‘সুরক্ষা’ অ্যাপ। ইতোমধ্যে ৫০ লাখ ১৭ হাজার ৮০৪ লোক টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন। আর টিকা নিয়েছেন ৩৭ লাখ ৮৯ হাজার ৩৫২ জন।

সরকারি পরিকল্পনায় সারা দেশের ১৩ কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। যদিও এখন পর্যন্ত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করেছে সরকার। এসব টিকার মধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুই দফায় ৭০ লাখ ডোজ এসেছে দেশে। এর বাইরে ভারত সরকারের উপহার হিসেবে এসেছে ২০ লাখ ডোজ টিকা। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা ছিল। এর বাইরে প্রথমেই উপহারের ২০ লাখ টিকা হাতে আসায় টিকাদান পরিকল্পনায় প্রাথমিকভাবে মাসে ৬০ লাখ ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় সেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে মাসে ৩৫ লাখ ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে করোনার টিকা। ঢাকাসহ সারা দেশে ১ হাজার ১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার ৪৭টি কেন্দ্র রয়েছে। আর ঢাকায় ২০৪ এবং বাইরে ২ হাজার ১৯৬টি স্বাস্থ্যকর্মীর দল এসব কেন্দ্রে সরাসরি টিকা প্রয়োগ করছে।

ধারাবাহিকভাবে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মোট ৭ হাজার ৩৪৪টি দল প্রস্তুত রেখেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিটি দল দৈনিক ১৫০ জনকে টিকাদান করতে পারবে। সে হিসাবে দৈনিক তিন লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের। যদিও সক্ষমতা অনুযায়ী টিকা দেওয়া হচ্ছে না। এখনো অনেক মানুষ নিবন্ধন করার পর এসএমএস পেতে বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এর পরই রয়েছে চট্টগ্রাম। টিকাদানে গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষ এগিয়ে রয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com