কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদসহ সব হত্যার বিচার, মিথ্যা মামলা-হয়রানি বন্ধ এবং ভিন্নমত ও গণমাধ্যম দমনের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে এক নাগরিক পদযাত্রা বের হয়েছে। যেখানে শারীরিক অসুস্থতার জেরে হুইল চেয়ারে বসে পদযাত্রার নেতৃত্ব দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পদযাত্রাটি হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল মোড়ে গেলে তাতে বাধা দেয় পুলিশ।
এ পদযাত্রায় অংশ নেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ডাকুসর সাবেক ভিডি নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড মহাসচিব কাউন্সিলের নঈম জাহাঙ্গীর, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা চৌধুরী।
আরও রয়েছেন সাংস্কৃতিক সংগঠন সমগীতের সংগঠক বিথী ঘোষ, লেখক ও প্রাবন্ধিক অরুপ রায়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগার ভোগ করা রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল আলম ভূঁইয়া, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানসহ বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারা, সাংস্কৃতিক কর্মী প্রমুখ।
এদিকে, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুসহ সব হত্যার বিচার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত নাগরিক সমাবেশে সংহতি জানিয়েছেন গণফোরামের একাংশের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
আজ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবেদন পড়ছি। অতি সম্প্রতি লেখক মুশতাক আহমেদের কাশিমপুর কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংবাদ পড়েছি। তার জামিন আবেদন ছয়বার নামঞ্জুর করা হয়। শেষবার যখন তাকে আদালতে আনা হয় তখন তার শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট অবনতি ঘটেছিল। কিন্তু তারপরও তাকে জামিন দেওয়া হয়নি।’
গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে মুক্ত চিন্তা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চরমভাবে খর্ব করা হয়েছে। মানবাধিকার ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এই আইনের নিবর্তনমূলক ধারাগুলো সংশোধনের জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও সরকার এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বরং এর অপব্যবহার বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এইভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সরকারের অত্যাচার ও নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। এই কালো আইনটির অপব্যবহারের চরম বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে লেখক মুশতাক আহমেদের কারা হেফাজতে মৃত্যু। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর সার্বিক অবস্থার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত অপরিহার্য। এ ঘটনা নাগরিকদের বিবেককে আহত করেছে। ফলে আজ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে, যাতে করে মুশতাকের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করা হয় ও তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়।’
Leave a Reply