প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গতকাল রোববার এই ভাইরাসে আরও ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে নতুন করে ৩ হাজার ৬২ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট ৯১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ১৭১ জনে।
চীনের মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে একজন জাপানি ও একজন মার্কিন নাগরিক রয়েছেন, বাকিরা চীনা নাগরিক। চীনের বাইরে এ পর্যন্ত ফিলিপাইন ও হংকংয়ে দুই চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে নতুন এ করোনাভাইরাসে, যাকে বলা হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস।
চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে চীনের সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া ও বার্তাসংস্থা রয়টার্স আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৩১টি প্রাদেশিক স্তরের অঞ্চল এবং জিনজিয়াং প্রোডাকশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কর্পস থেকে রোববার ৯৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া নতুন করে করোনাভাইরাসে ৩ হাজার ৬২ জনের আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, মৃতদের মধ্যে ৯১ জন হুবেই প্রদেশে, দুজন আনহুইতে, পাশাপাশি হাইলংজিয়াং, জিয়াংসি, হাইনান ও গানসু প্রদেশে যথাক্রমে একজন করে মারা গেছে। করোনাভাইরাসে আরও ৪ হাজার ৮ জন আক্রান্ত হতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ২৯৬ জন রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আর ৬৩২ জন সুস্থ হওয়ায় তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৬ হাজার ৪৮৪ জন রোগী গুরুতর অবস্থায় রয়েছে এবং ২৩ হাজার ৫৮৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া মোট ৩ হাজার ২৮১ জন রোগী সুস্থ হওয়ায় তাদের হাসপাতাল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে।
মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।
রোববার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০০২-০৩ সালে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্সকেও (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ছাড়িয়ে গেছে। সে সময় সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের ২৪টিরও বেশি দেশে মোট ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়, আক্রান্ত হন ৮ হাজার ৯৮ জন।
Leave a Reply