সৌদি আরবের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা বা গ্রেপ্তার করতে অনুমোদেন দিয়েছিলেন সৌদি আরবের ‘ক্রাউন প্রিন্স’ মোহাম্মদ বিন সালমান। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের দপ্তর খাশোগি হত্যা নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে খাশোগি হত্যায় যুবরাজ সালমান অনুমোদন দিয়েছেন বলে তারা দাবি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা বা আটক করার জন্য পরিচালিত অভিযানে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান অনুমোদন দিয়েছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই অভিযানে সৌদি যুবরাজের যে অনুমোদন ছিল তা তিনটি কারণে বিশ্বাস করা যায়।কারণ তিনটি হলো- প্রথমত, ২০১৭ সাল থেকে রাষ্টের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ; দ্বিতীয়ত, খাশোগি হত্যায় তার একজন উপদেষ্টার সরাসরি জড়িত থাকা এবং তৃতীয়ত, বাইরের দেশে অবস্থানরত ভিন্ন মতাবলন্বীদের দমনে সহিংস পদেক্ষপ গ্রহণে তার (সৌদি যুবরাজ) সমর্থন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়। সৌদির একটি কিলিং স্কোয়াড যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে।তবে প্রথম থেকেই ওই হত্যাকাণ্ডের নিজেদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছিল সৌদি আরব সরকার। পরে অবশ্য দায় স্বীকার করতে বাধ্য হয়। এ ঘটনার পর এই প্রথম খাশোগি হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজের নাম প্রকাশ করল যুক্তরাষ্ট্র।
সাংবাদিক জামাল খাশোগি কট্টরপন্থী দেশ সৌদির রাজপরিবারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ছিলেন।সেখানে তিনি সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন। খাশোগি ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর দুপুরে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন। তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কিছু নথিপত্রের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। কনস্যুলেটের ভেতর সৌদি এজেন্টদের একটি দল নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করে।
খাশোগি হত্যার ঘটনায় ৮ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তিনজনকে ২৪ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরবের একটি আদালত। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ রায় দেওয়া হয়।
Leave a Reply