বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের ওপর পরিবহন শ্রমিকদের হামলা এবং ঘটনার জেরে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শনিবার উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে।
অবরোধের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা। দক্ষিণের পাঁচ জেলাসহ পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটার সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ আছে।
শুক্রবার রাতে রনি ও ফিরোজ নামে দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তারা জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম।
তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, এই গ্রেফতারের বিষয়ে তারা অবগত নন। তিন দফা দাবি আদায়ে তারা আন্দোলন চালাচ্ছেন তারা। দাবি পূরণ হলেই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে।
দ্বিতীয় দফায় ১৩ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার মধ্যেই শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার কিছু সময় পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের দুই পাশে আটকা পড়ে কয়েক শ’ যানবাহন। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
বিশ্ববিদ্যািলয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অন্য তম নেতা মাহামুদুল হাসান তমাল বলেন, ‘প্রশাসন অনেকটাই গা ছাড়া ভাব দেখিয়েছে, সেজন্য আমাদের মৌলিক অধিকারের জায়গা থেকে আন্দোলন করতে হচ্ছে। আর সড়ক অবরোধের কারণে জনগণের যে ভোগান্তি হচ্ছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি, তবে এছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।’
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা দিলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। আবার সে অভিযোগে ঘটনার সঠিক বিবরণ না দিয়ে শুধুমাত্র জখমের কথা উল্লেখ করা হয়। যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখান করেছেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এর আগে, ১৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর সাথে বিআরটিসি বাস কর্মীর বাকবিতণ্ডার জেরে এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত ও অপর এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করা হয়। ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুই ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ শেষে আবাসস্থলে ফিরে যান। এর জেরে ১৭ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে নগরীর রুপাতলী বাস স্টান্ড সংলগ্ন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেসে গিয়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আহত ১১ শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার পরপরই রাত ২.৩০ মিনিটে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বুধবার বিকাল ৪টায় অবরোধ তুলে নেন তারা।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যা্লয় প্রশাসন মামলা করলে তাতে যথাযথ অভিযোগ আনা হয়নি দাবি করে পুনরায় শুক্রবার সড়ক অবরোধ ও মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যা ৭টা থেকে পুনরায় ১৩ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় তারা।
সূত্র : ইউএনবি
Leave a Reply