তার নাম টোমাস কেমারিশ৷ মাত্র এক দিন তিনি জার্মানির টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন৷ তারপর প্রবল সমালোচনার কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷
তবে এই এক দিনের কাজের জন্য তিনি ৯৩ হাজার চার ইউরো, যা বাংলাদেশী টাকায় সাড়ে ৮৬ লাখ টাকার বেশি, পেতে পারেন বলে এক রিপোর্টে হিসেব করে দেখিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ‘রিডাকসিয়ুন্স নেটৎসভ্যার্ক ডয়েচলান্ড’ বা আরএনডি৷
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এক দিন কাজ করলেও তিনি পুরো মাসের বেতন পাবেন, যা ১৬ হাজার ৬১৭ ইউরো৷ সঙ্গে যোগ হবে কাজের ভাতা ৭৬৬ ইউরো৷ আর যেহেতু তিনি বিবাহিত, তাই পরিবার ভাতা হিসেবে পাবেন ১৫৩ ইউরো৷ অর্থাৎ সব মিলিয়ে তার এক মাসের বেতন হচ্ছে ১৭ হাজার ৫৩৬ ইউরো৷
আরএনডি বলছে, টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের আইন অনুযায়ী, কেমারিশ ছয় মাসের জন্য চাকরি পরিবর্তনকালীন ভাতাও পাবেন৷ এই সময় প্রথম তিনমাস তিনি মাসিক বেতনের পুরোটা, আর পরের তিন মাস অর্ধেক করে পাবেন৷
সবমিলিয়ে কেমারিশ ৯৩ হাজার চার ইউরো পাবেন বলে জানাচ্ছে আরএনডি৷
‘অবৈধভাবে জার্মানিতে প্রবেশকারী শরণার্থীদের দিকে গুলি ছোড়া উচিত জার্মানির বর্ডার পুলিশের’, বলেছিলেন এএফডি’র কো-চেয়ার৷ ২০১৬ সালে জার্মানির একটি আঞ্চলিক পত্রিকাকে তিনি জানান, পুলিশ অফিসাররা সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারে৷ সর্বশেষ সাবেক কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির নেতা এরিক হ্যোনেকার এ ধরনের কথা বলেছেন৷
কেন পদত্যাগ?
ইসলাম ও অভিবাসনবিরোধী দল হিসেবে পরিচিত এএফডি দলের সমর্থন নিয়ে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন কেমারিশ৷ তারপর প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি৷ কারণ জার্মানির দলগুলো কখনও এএফডিকে সমর্থন করবে না কিংবা তাদের সমর্থন নেবেনা বলে অতীতে জানিয়েছিল৷ কিন্তু বুধবার দেখা গেল টুরিঙ্গিয়ার মুখমন্ত্রী নির্বাচনের সময় এএফডির ভোটারদের সহায়তা নিয়ে জয়ী হন ব্যবসাবান্ধব দল বলে পরিচিত এফডিপির রাজনীতিক কেমারিশ৷
অনেকে কেমারিশের নির্বাচিত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে নাৎসি আমলের শুরুর দিকের ঘটনার মিল খুঁজে পেয়েছিলেন৷ কারণ গত শতকের ত্রিশের দশকে আডল্ফ হিটলার চ্যান্সেলর হওয়ার আগে এই টুরিঙ্গিয়া রাজ্যেই নাৎসি দল প্রথম সরকার পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিল৷
কেমারিশের নির্বাচিত হওয়ার পেছনে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দলেরও সহায়তা ছিল৷ অর্থাৎ এএফডির পাশাপাশি ম্যার্কেলের দলের ভোটারদেরও সহায়তা পেয়েছেন তিনি৷
তবে এএফডির সঙ্গে হাত মেলানোয় সিডিইউ দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের উপর ক্ষুব্ধ হন ম্যার্কেল৷ বৃহস্পতিবার তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে দলের ‘নীতি ও মূল্যবোধ’ ভুলে যাওয়ার অভিযোগ আনেন৷ সেই সঙ্গে কেমারিশের নির্বাচনকে ‘গণতন্ত্রের জন্য খারাপ দিন’ আখ্যায়িত করে ফলাফল উলটে দেয়ারও আহ্বান জানান জার্মান চ্যান্সেলর৷
এরপর বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করেন কেমারিশ৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে
Leave a Reply