ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনার সাড়ে ২৭ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত রেলওয়ে লাইন মেরামতের পর গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ৩টার দিকে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
আজ শনিবার দৈনিক আমাদের সময়কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মাইজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান মাস্টার মো. মনির হোসেন। তিনি জানান, শুক্রবার রাত ৩টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলের ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত সম্পন্ন হওয়ার পর সোয়া ৩টার দিকে আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে ।
জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে ৯৫১ নং তেলবাহী ট্রেন ২০টি বগি নিয়ে সিলেটের উদ্দেশে আসছিল। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পৌনে ১২টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণে কায়স্থগ্রাম এলাকার গুতিগাঁওয়ে ১০টি তেলের বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে যায়। ফলে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মাইজগাঁও স্টেশনে আটকা পড়ে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সমসু মিয়া জানান, বিকট শব্দে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখেন তেলবাহী ট্রেন পড়ে আছে। তখন তিনি পরিচিত একজনকে ফোনে মাইজগাঁও স্টেশন মাস্টারকে বিষয়টি জানাতে বলেন। এসময় ৫টি বগি থেকে তেল মাটিতে পড়তে থাকে। এমনকি পার্শ্ববর্তী ডোবা নালায় ভাসতে থাকে তেল। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয় অগ্নিকাণ্ডের। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার পুলিশ ও ফেঞ্চুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
মাইজগাঁও স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার পার্থ তালুকদার জানন, মাইজগাঁও স্টেশনে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন আটকা পড়ায় জনরোষে পড়তে হয় তাকে। পরে ট্রেনটি পুনরায় সিলেটে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
এদিকে লাইনচ্যুত হওয়া ওয়াগনগুলোর মধ্যে ৫টি থেকে পড়ে যাওয়া তেল সংগ্রহে হুমড়ি খেয়ে পড়েন স্থানীয়রা। দুর্ঘটনার পর থেকে গতকাল শুক্রবার সারাদিন তেল সংগ্রহ ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় স্থানীয়দের। জানা যায়, এ দুর্ঘটনায় প্রায় ৭’শ মিটার রেললাইন এবং দুই লাখেরও অধিক লিটার জ্বালানি তেলের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা মো. খাইরুল কবিরকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি কমিটি গঠন করা হয়।
রেলওয়ের বিভাগীয় আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) সাদিকুর রহমান জানান, আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে লাইনচ্যুতকৃত বগি উদ্ধারকাজ শেষ হলেই তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করবে বলে জানান বিভাগীয় রেলওয়ের এ কর্মকর্তা।
Leave a Reply