1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

প্রচুর অর্থ থাকা সত্ত্বেও প্রবীণ দম্পতির ‘ইচ্ছামৃত্যু’

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২১

প্রদ্যুৎ লাহিড়ি ও তার স্ত্রী প্রণতি লাহিড়ি, প্রবীণ এই দম্পতির অর্থের অভাব নেই। তারপরও মনে ছিল না সুখ। তাদের একমাত্র মেয়ে মধুমিতা। গত শনিবার ছিল তার জন্মদিন। বাবা-মা অতি আনন্দে দিনটি পালন করেন। কিন্তু তারপরও আনন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কারণ, তাদের অঢেল সম্পত্তি দেখার কেউ ছিল না। তাই ‘ইচ্ছামৃত্যু’ বরণ করেন তারা।

গতকাল রোববার প্রদ্যুৎ লাহিড়ি ও প্রণতি লাহিড়ির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মঘাতী হন তারা। মৃত্যুবরণের আগে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান এ দম্পতি, তাতে লেখা ‘দেখার কেউ নেই, তাই ইচ্ছামৃত্যু নিলাম’। চিরকুটে প্রদ্যুৎ-প্রণতির স্বাক্ষর।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হরিদেবপুর থানা এলাকার জেমস লং সরণিতে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় অবাক দম্পতির প্রতিবেশিরা। নিজেদের ফ্ল্যাটেই আত্মঘাতী হন তারা।

পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর প্রদ্যুৎ-প্রণতির ময়নাতদন্ত করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানিয়েছে, অতিরিক্ত সংখ্যক ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাদের।

ভারতের গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হরিদেবপুরের এই দম্পতির অর্থের অভাব ছিল না। এক মেয়ে বাদে তাদেরকে দেখার মতো কেউ ছিল না। মেয়ে মধুমিতা থাকেন বাবা-মা থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে। এই কষ্টই তাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল। মেয়ের নামে স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিও লিখে দিয়েছিলেন প্রদ্যুৎ লাহিড়ি। একটি খাতা ও একটি ডায়েরিতে এসব তথ্য লিখে গিয়েছেন তিনি।

পুলিশ জানায়, জেমস লং সরণির একটি চারতলা আবাসনের দোতলার তিন কামরার ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ছিলেন লাহিড়ি দম্পতি। মেয়ে মধুমিতা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের স্কুলশিক্ষিকা। কর্মসূত্রে অনেক সময়ই জয়নগরে থাকতেন। আবার কখনও মা-বাবার কাছে। শনিবার তার জন্মদিন ছিল। জেমস লং সরণির বাড়িতেই ছিলেন তিনি। জন্মদিন পালনের পর রাতের খাবার খেয়ে প্রত্যেকে ঘুমোতে যান। মেয়ে মধুমিতা নিজের ঘরে ছিলেন। তিনি বুঝতেও পারেননি কখন তার মা-বাবা একসঙ্গে সুইসাইড নোট লেখার পর ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন। সকালে উঠে মা-বাবাকে ডাকতে গিয়ে মেয়ে দেখেন, দরজা খোলা রয়েছে। মা-বাবার নিথর দেহ দেখে চিৎকার করে প্রতিবেশিদের ডাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। পরে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থলে তদন্তে যান। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তারা যে আত্মঘাতী হয়েছেন, সেই ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জেনেছে, বৃদ্ধ দম্পতি বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। তাদের মেয়ের সংসারেও অশান্তি চলছিল। তার ওপর মেয়ে বহুদূরে চাকরি করতে যান। করোনা পরিস্থিতিতেও মাঝেমধ্যে যেতে হতো স্কুলে। তাই মা-বাবাকে সেভাবে দেখাশোনা করতে পারতেন না মেয়ে মধুমিতাও। অন্য কেউ বিশেষ দেখার ছিল না। এ ছাড়াও মেয়ের ডিভোর্স ঘিরেও চিন্তিত, বিমর্ষ ছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। তাদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিল। শুশ্রূষা পাচ্ছেন না বলে আক্ষেপও ছিল তাদের।

পুলিশ জানিয়েছে পুরো ঘটনাটির তদন্ত চলছে। আত্মঘাতী দম্পতির মেয়ে মধুমিতা ও অন্য আত্মীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com