ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমাতে আশপাশে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় জোর দিয়েছে সরকার। এর আওতায় গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে গড়ে উঠছে উপশহর। কিন্তু নেই সুষ্ঠু যোগাযোগব্যবস্থা। ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মানুষের চাপ কমাতে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের ব্যাপারে নতুন করে পরিবহন পরিকল্পনা করছে সরকার। এতে শহরের রাস্তাঘাট, উন্নয়ন অবকাঠামোয় আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এটি না করতে পারলে যত্রতত্র গড়ে ওঠা উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে যানজটের মাত্রা আরও ভয়াবহ হবে। এর সমাধানেই সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনার মাস্টারপ্ল্যান করছে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। ২০ বছর মেয়াদি এ পরিকল্পনায় অবকাঠামোর বিস্তারিত বিবরণ থাকবে। ডিটিসিএর সঙ্গে সমন্বয় বা অনুমোদন ছাড়া কোনো সংস্থা যোগাযোগ অবকাঠামো গড়তে পারবে না।
সূত্র জানায়, যানজট কমাতে ঢাকা শহরে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। কার্যত সুফল নেই। এক প্রকল্পের সঙ্গে আরেক প্রকল্প সাংঘর্ষিক দশায় ঝুলে আছে উন্নয়ন পর্ব। সংশোধন আনা হচ্ছে অ্যালাইনমেন্টে। এ রকম বাস্তবতায় সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা করেছে ডিটিসিএ। এর ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের জন্য মাস্টারপ্ল্যান করা হবে। এ জন্য নেওয়া প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি ২৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ভিশন
২০৩০-এর মাধ্যমে নাগরিকদের পরিবেশবান্ধব ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দিতে চায় ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে এলআরটি, আউটার রিং রোড, বিআরটি-৭, মাল্টিমডেল হাব ইত্যাদি মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে নারায়ণগঞ্জ শহরে উন্নত পরিবহনব্যবস্থা গড়ে তোলা যাচ্ছে না। একইভাবে গাজীপুর একটি শিল্প এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবেও সুনাম রয়েছে। ঢাকা শহরের চাপ কমাতে এসব এলাকায় মানুষ বসবাস করছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে গাজীপুরের যানজট তীব্র হচ্ছে। এ জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন। এ জন্যই মাস্টারপ্ল্যান করছে ডিটিসিএ।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য- নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ভবিষ্যতের জনসংখ্যা, ট্রাফিক ইত্যাদি বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ কার্যকর, দক্ষ ও নিরাপদ সুষ্ঠু পরিবহনব্যবস্থা গড়ে তুলতে ২০ বছর মেয়াদি পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন; নারায়ণগঞ্জের জন্য মাল্টিমডেল হাবের ধারণামূলক নকশা প্রণয়ন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আশপাশে ট্রাক টার্মিনালের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ধারণাগত নকশা প্রণয়ন, পরিবহন নীতিমালা এবং গণপরিবহনের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই হবে। তা ছাড়া নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর শহরকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত এবং পরিবহনব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসন, পরিবহন পরিকল্পনার সঙ্গে ভূমি ব্যবহারের সমন্বয় সাধন, নগরে গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা।
ডিটিসিএ অধিভুক্ত এলাকা হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন রয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকা শহরের জন্য সমন্বিত পরিবহনব্যবস্থা গড়ে তুলতে আরএসটিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের জন্য পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা দরকার, যেন বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে সমন্বয়সহ গণপরিবহন প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার পায়। ডিটিসিএর বোর্ডসভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের জন্য পরিবহন মাস্টারপ্ল্যানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে গাজীপুরের যানজট সমস্যা সমাধানের বিষয়টি।
Leave a Reply