1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন

ফিরে এসেছে গজনীর প্রাণ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২১

পাহাড় কিংবা সবুজ টানে না, এমন মানুষ কমই আছেন। শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশ কেন্দ্র যেন সে দুই-ই হাতছানি দিয়ে ডাকে। এখানকার পাহাড়, টিলা ও সমতল ভূমিতে সবুজের সমারোহ। এর মধ্যে শাল, গজারি, সেগুন, লতাপাতার বিন্যাস দোলা দিয়ে যায় প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়কে। অপরূপ পাহাড়ের পাশ ঘেঁষেই ভারতের মেঘালয় রাজ্য। যে দিকেই চোখ যায়, যেন সবুজের চাদরে মোড়ানো।

বৈশ্বিক মহামারী করোনার বিপর্যয় মোকাবিলা করে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে গারো পাহাড়খ্যাত ‘গজনী অবকাশ’। ২০২০ সালকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরের শুরুতেই লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে এ পর্যটন কেন্দ্রটি। গতকাল শুক্রবারও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উচ্ছ্বাস আর আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ভ্রমণপিপাসুদের। অনেকদিন পর পর্যটক দেখে দারুণ খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তবে দর্শনার্থীদের সিংহভাগই মানছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি।

গজনীর মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুব সহজেই আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নতুন করে পাহাড়ের বুকজুড়ে তৈরি হয়েছে সুদীর্ঘ ওয়াকওয়ে। পায়ে হেঁটে পাহাড়ের স্পর্শ নিয়ে লেকের পাড় ধরে হেঁটে যাওয়া যাবে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। পড়ন্ত বিকালে ছোট ছোট নৌকায় করে ঘুরার জন্য রয়েছে লেক। এর বুকে নৌকায় চড়ে পাহাড়ের পাদদেশে কফি আড্ডা আর গান এখানে আগত দর্শণার্থীদের জন্য অন্য রকম অভিজ্ঞতা তৈরি করবে। ‘গারো মা ভিলেজেও’ ছোঁয়া লেগেছে নতুনত্বের। মাশরুম ছাতার নিচে বা পাখি বেঞ্চে বসে পাহাড়ের ঢালে আদিবাসীদের জীবনযাত্রা, দিগন্তজোড়া ধানক্ষেত আর পাহাড়ি জনপদের ভিন্ন জীবনমান উপভোগ করা যাবে খুব সহজেই। শিশুদের জন্য চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্কের পাশাপাশি এবার নতুন যুক্ত হচ্ছে শিশুকর্নার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গজনী অবকাশের বিভিন্ন জায়গায় কেউবা তুলছেন সেলফি, কেউবা নিজ ও প্রিয়জনের ছবি ক্যামেরাবন্দি করছেন মোবাইলফোনে। চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্ক ছিল সকাল থেকেই মুখরিত। ভিড় বেড়ে যাওয়ায় পার্কের ফটকে লম্বা লাইন। এ সময় শিশুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে শিশুপার্কটি। বিভিন্ন রাইডে চড়ে ও খোলামেলা পরিবেশ পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠে তারা। শিশুদের সঙ্গে অনেক অভিভাবককেও আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায়।

জামালপুর থেকে আসা শাহরিয়ার রনি বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারী করোনার জন্য অনেকদিন ঘরে বন্দি ছিলাম। তাই আজ (শুক্রবার) পরিবারের সবাইকে নিয়ে পাহাড় দেখতে এসেছি। গারো পাহাড় ও পর্যটন কেন্দ্রে তৈরি কৃত্রিম দৃশ্যগুলো দেখে মনটা ভালো হয়ে গেল। শিশুরাও বেশ আনন্দ পেয়েছে।’ স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহীন বলেন, ‘প্রতিদিনই এমন দর্শনার্থী থাকলে করোনার জন্য যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। এখন আমাদের বিক্রিও ভালো।’ পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারের ইজারাদারদের পক্ষ থেকে দায়িত্বে থাকা শাহজাহান সরকার বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) ছোট-বড় প্রায় দুশতাধিক গাড়ি দিয়ে পর্যটক এসেছে। করোনাকালীন এটাই সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থীর আগমন।’

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যারা মাস্ক নিয়ে আসে নাই অথবা হারিয়ে ফেলেছে, তাদের মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। নতুন বছরে করোনার দ্বিতীয় থাবা যদি সঠিকভাবে মোকাবিলা করা যায় তা হলে গজনী অবকাশ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকদিন পর গজনী অবকাশে দর্শনার্থী বেড়েছে। এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকায় নিরাপত্তারও কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া আগত দর্শনার্থীরা যাতে নির্বিঘেœ ঘোরাফেরা করতে পারে তার জন্য ইউনিফর্মে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com