বরগুনার বেতাগীতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে গুম হয়ে অবশেষে নিজেই ফেঁসে গেলেন। গুম ও খুন নাটকের ২ বছর ৫ মাস ১৮ দিনের মাথায় উপজেলার দেশান্তরকাঠী গ্রামের হুমায়ূন কবির ওরফে নাসির উদ্দিনকে জনতা তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা সাজানো মামলায় নিরাপরাধ ব্যক্তিরা হয়রানির শিকার ও জেল খেটেছেন। গত বুধবার তাকে বরগুনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, হুমায়ূন কবির ওরফে নাসির উদ্দিন গংয়ের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত কাশেম সিকদারের ছেলে আবদুস কুদ্দুস, মো. খলিল হাওলাদারের ছেলে মো. ইসমাঈল, দলিল উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে মো. কবির, মো. মোসলেম মুন্সীর ছেলে নাসির উদ্দিন, মৃত ইউসুফ সিকদারের ছেলে মো. ইউনুছ আলী, মো. মোসলেম মুন্সীর ছেলে মো. জাকির হোসেন ও আবদুল মন্নান আকনের ছেলে মো. রাজীবের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে হুমায়ূন কবিরের স্ত্রী রুনু বেগম তাদের বিরুদ্ধে বরগুনায় মানবপাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ১১ জুলাই হুমায়ূন কবির ওরফে নাসির উদ্দিন আসামিদের ভয়ে পার্শ্ববর্তী বজলু মৃধার বাড়িতে রাত যাপনের জন্য রওনা হন। পথে রামদা, ছেনা ও ডেগারের ভয় দেখিয়ে রাত ১১টায় দেশান্তরকাঠীর রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে তাকে অপহরণ করে খুন করা হয়।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর গত মঙ্গলবার পাপার্শ্ববর্তী মির্জাগঞ্জ উপজেলার চাকরখালী বাজারে হুমায়ূন কবির ওরফে নাসির উদ্দিনকে হঠাৎ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা চিনে ফেলে। তারা তাকে আটক করে বেতাগী থানায় সোপর্দ করে।
এদিকে সাজানো মামলার আসামি মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের ফাঁসানো জন্য অপহরণের নাটক সাজিয়ে মামলা করা হয়েছিল। দুই বছর পলাতক থেকে আমাদের হয়রানি করে জেল পর্যন্ত খাটিয়েছে বাদীপক্ষ। আমরা এর সুষ্ঠু ও সঠিক বিচার দাবি করছি।
বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন তপু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলাটি সাজানো ছিল। তবে ওই সময় অনেক চেষ্টা করেও হুমায়ূন কবিরকে খুঁজে না পাওয়ায় মামলাটি আমলে নেওয়া হয়। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই তিনি পলাতক ছিলেন।
এর আগে পাথারঘাটা সার্কেলের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের মানবপাচারের বিষয়টি সন্দেহজনক প্রতীয়মান হয় বলে আসামিদের অনুকূলে মানবপাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
Leave a Reply