বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে বিরোধিতা করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, চরমোনাই পীরের ছেলে ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম ও হেফাজত নেতা মোহাম্মদ জুনায়েদ বাবু নগরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের পৃথক দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে ঢাকান নিম্ন আদালতে।
আজ সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক। অপর মামলাটি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আইনজীবী মশিউর মালেকের মামলায় শুধু মামুনুল হক এবং অপর মামলায় তিনজনই আসামি।
ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত সিকদার মামলার আবেদনকারী বাদীদ্বয়ের জবানবন্দি বেলা সাড়ে ১১টায় গ্রহণ করে আদেশ পরে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলায় মামুনুল হক সম্পর্কে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর বিএমএ মিলনায়তনে বাংলাদেশ যুব খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগর শাখার সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে মামুনুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গড়তে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে লাশের পর লাশ পড়বে। আবার শাপলা চত্ত্বর হবে।’ সমাবেশে যুব মজলিসের কর্মীদের এ জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।
বাদী অভিযোগ করেন, মামুনুল হকের বক্তব্যের পর একটি শ্রণি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে একের পর এক বক্তব্য দিচ্ছেন। এতে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
মামলায় সৈয়দ ফয়জুল করিম সম্পর্কে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর এ আসামি যাত্রাবাগীস্থ গেন্ডারিয়ায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে ‘অন্দোলন করব, সংগ্রাম করব, জিহাদ করব। রক্ত দিতে চাই না, দিলে বন্ধ হবে না। রাশিয়াল লেলিনের ৭২ ফুট মূর্তি যদি ক্রেন দিয়ে তুলে সাগরে নিক্ষেপ করতে পারে তাহলে শেখ সাহেকের মূর্তি আজকে হোক কালকে হোক তুলে বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপ করবেন’ বলে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
মামলায় বাবু নগরী সম্পর্কে বলা হয়, এ আসামি মামুনুল হক ও ফয়জুল করিমের পরামর্শক্রমে গত ২৭ নভেম্বর হাটহাজারীতে বলেছেন, ‘মদিনা সনদে যদি দেশ চলে তাহহলে কোন ভাস্কার্য থাকতে পারে না। ভাস্কর্য নির্মাণ থেকে সরে না দাঁড়ালে আরেকটি শাপলা চত্তরের ঘটনা ঘটবে এবং ভাস্কর্য ছুঁড়ে ফেলবেন।’
মামলায় বলা হয়, আসামিদের উপরোক্ত বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। তাদের কারণে দেশে রায়টের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ধর্মকে কাজে লাগিয়ে আসামিরা রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে সাধারণ মুসলমানদের ক্ষেপিয়ে তুলে প্রকারান্তরে রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে ঘৃণা ও শত্রুতার মনোভাব সৃষ্টি করেছেন। আসামিদের উসকানিমূলক বক্তব্যে উদ্বুব্ধ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনের মধুদার ভাস্কর্য এবং কুস্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
Leave a Reply