মেহেদী হাতে নববধূ সেজে বরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কনে। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষেও প্রতারণা করে বিয়ে করতে আসেননি বর। হতাশ হয়ে এক পর্যায়ে ওই তরুণী জ্ঞান হারান। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের কোমাল্লা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এতে এলাকায় বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনায় তরুণীর মা বাদী হয়ে একই উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কাছিয়াপুস্করণী গ্রামের বর আলী আহাম্মদ, তার বাবা আইয়ুব আলী, বোন নাসরিন আক্তার ও মা ছালেহা বেগমের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, কয়েক দিন আগে ঘটক সেলিম মিয়ার মাধ্যমে উপজেলার কাছিয়াপুস্করণী গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আলী আহাম্মদের জন্য কোমাল্লা গ্রামের মৃত আমির হোসেন ভুঁইয়ার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দেন।
পরে উভয়পক্ষের আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে বিয়ের দিন-সময় ধার্য করা হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় আলী আহাম্মদের সঙ্গে ওই তরুণীর বাড়িতেই বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। উভয়পক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিয়েতে মোহরানা সাড়ে তিন লাখ টাকা ও দেড় লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কারও ধার্য করা হয়।
বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাতে সব আয়োজন শেষ করে ওই তরুণীর পরিবারের লোকজন। গ্রামের দাওয়াতি মেহমান খাওয়া শেষে বরপক্ষের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পরও তারা আসছেন না দেখে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটক, ছেলে ও তার পরিবারের লোকজনের কাছে ফোন করা হয়। তখনো তারা আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতারণা করে আর আসলোই না বরপক্ষ।
মেহেদী হাতে নববধূ সাজে অপেক্ষায় ছিলেন ওই তরুণী। দীর্ঘ সময় পার হলেও বর না আসায় অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ওই তরুণীর পরিবারের তিন লাখ টাকা ও মান-সম্মানের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মা জিন্নতের নেছা।
এ বিষয়ে বর আলী আহাম্মদের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে তিনি ফোন বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি, ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply