করোনায় বেশ জাঁকজমকভাবে উৎসব এবার না হলেও স্বল্প পরিসরে আমেজে মেতে উঠছে মায়ের আগমনের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। অন্য বছর থেকে তুলনায় কম দর্শনার্থী আশা করা হলেও মন্দিরগুলোয় খুব যত্ন নিয়ে পরিষ্কার রেখেই বিধি মেনে প্রস্তুতি চলছে পূজার। শুধু সাজসজ্জায় নয়, করোনার জন্য নিয়ম মানা হচ্ছে খাদ্যতেও। রাখা হচ্ছে বাড়তি সুরক্ষাও।
অন্যদিকে আকর্ষণের হচ্ছে পোশাক। বছরজুড়ে যতই পোশাক নেওয়া হোক না কেন, উৎসবে তো চাই নিজের জন্য সবচেয়ে স্টাইলিশ পোশাকটি। এ ছাড়া উৎসব এবং পোশাক নিয়ে ভাবলে চিন্তায় আসে নারীদের শাড়ি আর পুরুষদের পাঞ্জাবি। এর মধ্যে নতুন ডিজাইন বুঝতে পারাও কঠিন। তবুও ফ্যাশন হাউসগুলো প্রতিবারের মতোই পোশাকে নিয়ে আসছে নতুন চলে নতুন ধাঁচ। পূজার সময় বাঙালি সাজের ধরন পছন্দ করেন কলকাতার স্টাইল লাল-সাদার মিশেলে রঙ। তবে এর পাশাপাশি ডিজাইনাররা রঙে নিয়ে আসছেন ভিন্নতা। দুই-তিনটি রঙে সীমাবদ্ধ না থেকে শরতের রঙেও ছোঁয়াচ্ছে পোশাকের ডিজাইন। জমকালো ডিজাইন না রেখেও পূজার অনুষঙ্গ শব্দ আর বাক্য, স্বস্তিকা, বেলপাতা, চক্রসহ মানিয়ে করা হচ্ছে পোশাক বলে জানিয়েছেন রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাশ। এ যেন গায়ে জড়ালেই মন মেতে উঠবে পূজায়। আর যেহেতু উৎসব মানেই সারাদিন ঘুরে বেড়ানো, সেহেতু আরামের বিষয়টিকে মাথায় রেখেই পোশাকের কাপড় বেছে নেওয়া হয়েছে।
শারদীয় উৎসবের দিনগুলোয় ঐতিহ্যবাহী সাজটা তো মানাবে ভালোই। সকালের দিকে অঞ্জলি দিতে হালকা নকশার সুতি পোশাকটাই বেশি আরাম দেবে। তাই নজরকাড়া নকশা করা শাড়ি দিয়েই দিন শুরু করতে পারেন। শাড়ির রঙের সঙ্গে মানানসই জুতা অবশ্যই থাকতে হবে, থাকতে হবে গহনা। গহনায় সব সময় বৈচিত্র্য থাকে। ফলে পছন্দমতো গহনা খুঁজে নিতে হবে আর পছন্দমতো পার্স বা ভ্যানিটি ব্যাগ। সেগুলোও হতে হবে পোশাকের সঙ্গে মানানসই। রাতের সাজে শাড়ি পরতে না চাইলে বেছে নিন জমকালো নকশার সালোয়ার-কামিজ ও গহনা। এ জন্য আড়ংসহ নানা শোরুমই নিয়ে এসেছে গহনার সেট, বিশেষ করে ইন্ডিয়ান রুপার কান ও গলার নেকলেসসেট, সঙ্গে পছন্দ করে আংটি ও চুড়িও পরতে পারেন।
রোদ-বৃষ্টি মিলে আবহাওয়া খুব ভ্যাপসা হয়ে যায়। এই সময় মেকআপ খুব যত্ন নিয়ে করাটা গুরুত্বপূর্ণ। মেকআপের বেজ ঠিকমতো না হলে খুব অল্প সময়ে কালো হয়ে আসবে এবং ফ্যাঁকাসে হয়ে যাবে। যেহেতু করোনার সময়, সেহেতু মুখে মাস্ক রাখাটা খুবই জরুরি। তাই পূজার সাজে নিজের চোখটি সুন্দর করে পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে সাজান এবং সঙ্গে হালকা লিপস্টিক দিন। ট্রেন্ডি বা ট্রাডিশনাল হেয়ারকাটে চুলটা সেট করে হেয়ারস্টাইল ভিন্ন রকম করে পূজার সাজটি দিতে পারেন। রাতে সাজের জন্য মুখে আইস অ্যাপ্লাই করুন। এতে ত্বকের সঙ্গে মেকআপ ভালোভাবে মিশে যাবে। এর পর প্রাইমার ব্যবহার করে ফাউন্ডেশন ব্লান্ড করুন। প্রেসড পাউডার লাগিয়ে বেজ মেকআপ কমপ্লিট করুন। চোখে হাইলাইট করে ব্রাউন, ব্রোঞ্জ, গোল্ড আইশ্যাডো দিয়ে ফুটিয়ে তুলুন।
পূজা মানেই মিষ্টি খাবার, নাড়ু, লাড্ডু, সন্দেশ কত কী! ছোটদের মধ্যে আমেজ আসে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টি দেওয়ার। যেহেতু উৎসব থেমে নেই, সেহেতু আনন্দেও কমতি কেন থাকবে। নিজ স্থান থেকে সুরক্ষা রেখেই ভাগাভাগি করুন পূজার আনন্দ। বাইরে থেকে যে কোনো কিছু নিয়ে আনলেই প্রথমে ওই বক্স বা বাইরের পাত্রটি হালকা করে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। সঙ্গে প্রতিবেশী বা কোথাও কিছু দিলে অবশ্যই তা পরিষ্কার একটি বক্সে দিয়ে ঢেকে দিন ও হাত-মুখে গ্লাভস-মাস্ক রেখেই অন্যের বাড়িতে দিন এবং ম-প বা মন্দির থেকে প্রসাদ নেওয়াতেও সচেতন থাকুন।
Leave a Reply