ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী উলফাত আরা তিন্নির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত মেলেনি। গতকাল সোমবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরএমও ডা. তাপস কুমার সরকার।
তিনি জানিয়েছেন, তিন্নির ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণের কোন আলামত মেলেনি। আর এটি ছিল সুইসাইডাল হ্যাঙ্গিং। যদিও প্রথম থেকেই তিন্নির পরিবার অভিযোগ করে আসছিল, এটি ছিল পাশবিক নির্যাতন ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। একই অভিযোগ করে আসছিল স্বজন-প্রতিবেশী ও তার সহপাঠিরা ।
প্রসঙ্গত, গত ২ অক্টোবর রাতে শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে তিন্নির রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। রাত ১২টার দিকে ঘর থেকে অর্ধঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়ে সদ্য পাশ করা তিন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ওইদিন সকালে তিন্নি কুষ্টিয়ায় এক বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে তার বোন ইফফাত আরা মুন্নির সাবেক স্বামী জামিরুল ইসলামের হুমকীর স্বীকার হয়। এরপর রাত ১০টার দিকে জামিরুলসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ও মই দিয়ে তিন্নির বাড়িতে প্রবেশ করে হামলা চালায়। রাত ১২টার দিকে ঘরের ভেতরে তিন্নিকে অর্ধঝুলন্ত নিথর অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তিন্নিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়।
এদিকে ঘটনার পরপরই পালিয়ে যায় মুন্নির সাবেক স্বামীসহ অন্যরা। তিন্নিকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ ওঠে, সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের।
তিন্নির মা হালিমা বেগম, তিন্নির বোন ইফফাত আরা মুন্নি ওরফে মিন্নি তখনই অভিযোগ করে তাদের পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনসহ তিন্নিকে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে জামিরুল ও সংঘবদ্ধ চক্র।
এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তিন্নির পরিবার শৈলকুপা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ঘটনার তিনদিন পর সোমবার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইবির এই শিক্ষার্থীর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সম্পন্ন হয়। ইতিমধ্যে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থানায় হস্তান্তর করেছেন চিকিৎসকরা।
Leave a Reply