চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুবে আলম। আজ সোমবার বেলা ১টার দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। এর আগে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে তার জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় ইমামতি করেন সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের পেশ ইমাম আবু সালেহ মো. সলিম উল্লাহ।
জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের (আপিল ও হাইকোর্ট) উভয় বিভাগের বিচারপতি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ দেশের বিভিন্ন বার থেকে আগত আইনজীবী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
জানাজা শেষে মাহবুবে আলমের কফিনে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি কনক কান্তি বড়ুয়া, পুলিশের (মহাপরিদর্শক) আইজি বেনজীর আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, ঢাকা (বার) আইনজীবী সমিতি, আইন, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন সমিতি, গণতান্ত্রিক আইনজীবীর নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবে আলম। আজ সোমবার সকালে মাহবুবে আলমের মরদেহ তার বেইলি রোডের সরকারি বাসায় আনা হয়। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ১০টার পরপরই তার মরদেহ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আনা হয়।
মাহবুবে আলম গত ৪ সেপ্টম্বর জ্বর ও গলা ব্যথা নিয়ে সিএমএইচে ভর্তি হন।ওই দিনই করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এরপর তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মাহবুবে আলম ১৯৭৫ সালে সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন। ১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। মাহবুবে আলম সুপ্রিম কোর্ট বারের ১৯৯৩-৯৪ সালে সম্পাদক ও ২০০৫-২০০৬ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরপর টানা ১১ বছর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মাহবুবে আলম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা, জাতীয় চার নেতা হত্যা, সংবিধানের ত্রয়োদশ ও ষোড়শ সংশোধনীসহ ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি করেন। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি শোক প্রকাশ করেছেন।
Leave a Reply