1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চলে প্রাইভেট ভাড়ায়

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

রাতের বেলা তেল পুড়িয়ে এসেছি, ১২’শ টাকা ভাড়ায় কি হয়? রোগীর অভিভাবকের কাছে এমন প্রশ্ন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক সৈয়দ আবুল হোসেনের। নিরুপায় অভিভাবক চালককে ১৫’শ টাকা দিয়ে বললেন, আর কি দিতে হবে? না চলবে, বলে বিদায় নিলেন সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ওই চালক।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সিলেটের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটে। ওই চালকের বিরুদ্ধে মেরামতের নাম করে কখনো সিলেটের ওয়ার্কশপে আবার কখনো নিজের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স রেখে লম্বা ছুটি কাটানোর অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোগীর সুবিধার্থে ভর্তুকি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালালেও লাভবান হচ্ছেন চালকরা। তাই নিজেদের খেয়াল খুশিমতো ফেঞ্চুগঞ্জ সরকারি হাসপালের অ্যাম্বুলেন্স চলছে প্রাইভেট ভাড়ায়।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিজামপুর গ্রামের আব্দুল আহাদ চৌধুরী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আমার আত্মীয়ের মাধ্যমে নম্বর সংগ্রহ করে সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক সৈয়দ আবুল হোসেনকে কল দেই, পরে আমার মাকে নিয়ে সিলেটের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। এ সময় চালক সৈয়দ আবুল হোসেনকে ১২’শ টাকা দিলে তিনি জানালেন, এত রাতে তেল জ্বালিয়ে এসেছি এই টাকায় কি হয়?’

সরকারি হাসপাতালের চালকের এমন কথায় পরে আব্দুল আহাদ চৌধুরী ১৫’শ টাকা দিয়ে চালককে আরও দিতে চাইলে আর লাগবে না বলে বিদায় নেন সৈয়দ আবুল হোসেন।

৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নতুন ও পুরাতন দুটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে এই হাসপাতালে। পুরাতন অ্যাম্বুলেন্সটি করোনা রোগী পরিবহনের জন্য রয়েছে সিলেটের খাদিমনগর করোনা আইসোলেশন সেন্টারে। আর নতুন অ্যাম্বুলেন্সটি চলছে ফেঞ্চুগঞ্জ হাসপাতালে।

জানা যায়, বেতন-ভাতাদি ও ওভারটাইমসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকা পেয়েও সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। তিনি নিজের প্রাইভেট গাড়ির মতো খেয়াল খুশিমতো ব্যবহার করছেন সরকারি এই অ্যাম্বুলেন্সটি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিলোমিটার প্রতি ১০ টাকা হারে ভাড়া নির্ধারণ করা রয়েছে।

তবে বিধান থাকলেও চালকের কাছে ভাড়ার কোন মূল্য তালিকা নেই। তা ছাড়া হাসপাতালের দৃশ্যমান কোথাও সাঁটানো নেই সাইনবোর্ড। তবে কৌশলে দায় এড়াতে গাছের আড়ালে বাউন্ডারি দেয়ালের সামনে ছোট একটি সাইনবোর্ডে বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি কিলোমিটার প্রতি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া লেখা রয়েছে, যা কোনোভাবেই কারও চোখে পড়ার নয়!

নিয়ম অনুযায়ী, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান ওয়ে ৩০ কিলোমিটার ধরে এ হিসেবে আপ-ডাউন ভাড়া ধরা হয় ৬০ কিলোমিটারের। ১০ টাকা হারে ৬০ কিলোমিটারে সরকারি সার্ভিস বুকে জমা হচ্ছে ৬’শ টাকা। ৬০ কিলোমিটারে জ্বালানি খরচ হয় ১০ লিটার, যার বর্তমান মূল্য ৮৯০ টাকা। রোগীর সুবিধার্তে এখানে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছেন ২৯০ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, দুর্বলতার সুযোগে নিম্নে ১ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত রোগীর অভিভাবকদের কাছ আদায় করছেন চালকরা।

হাসপাতাল এলাকার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না শর্তে জানান, চালক সৈয়দ আবুল হোসেন অ্যাম্বুলেন্স মেরামতের নাম করে কখনো সিলেটে ওয়ার্কশপে রেখে আবার কখনো নিজের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স রেখে ছুটি কাটান। হাসপাতালের বড়কর্তাকে ম্যানেজ না করে একজন চালকের এত দুঃসাহস হওয়ার কথা নয় বলে জানান স্থানীয়রা।

জানতে চাইলে চালক সৈয়দ আবুল হোসেন বাড়তি টাকা নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে ওয়ার্কশপে বা নিজের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের বড়কর্তার চেয়ারে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি চালককে জিজ্ঞেস করে বিষয়টি দেখছি।’ তবে ভাড়ার সাইনবোর্ড সাঁটানোর বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com