শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে প্রকল্পের ব্যয় ৯২ দশমিক ৫২ শতাংশ বা ৯৫৯ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে। মেয়াদও বাড়ানো হচ্ছে ২ বছর ৯ মাস। নির্ধারিত ব্যয় ও মেয়াদের মধ্যে থাকছে না ভাণ্ডাল জুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি।
ঠিকাদারের আয়কর, মূসক ও ভ্যাট, ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় বৃদ্ধি, কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি, একক দর দু’বার বাড়ানোর কারণে সার্বিক খরচ বেড়েছে বলে স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার একনেকে প্রকল্পটির ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পেশ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর বাম তীরসংলগ্ন এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে দৈনিক ৬ কোটি লিটার নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ, চট্টগ্রাম ওয়াসার নিরাপদ সুপেয় পানি উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
এই নগরীতে প্রতিদিনই সুপেয় পানির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়াসা বর্তমানে শহরের পানির চাহিদার ৮৬ শতাংশ মেটাতে পারছে না। এখনো ১৪ শতাংশ চাহিদায় ঘাটতি রয়েছে। ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (কেইডিসিএফ) কোরিয়া, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে এই প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়।
যার ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পটি শেষ করার কথা। এখন ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। এর বড় অর্থ ব্যয় হচ্ছে পরামর্শক সার্ভিস গ্রহণে।
ব্যয় বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসা বলছে, ঠিকাদারের কাজের ওপর নির্ধারিত আয়কর ও মূসক সংশোধনে ব্যয় বাড়ছে। এটা ডিপিপিতে যথাযথভাবে সংযোজন করা হয়নি। কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের ইডিসিএফ ফান্ডের আওতায় ঋণচুক্তি অনুসারে প্রকল্পের ঋণের টাকা থেকে এসব খাতে ব্যয় করা যাবে না।
ঠিকাদারদের আয়কর, ভ্যাট ও মূসক, পরামর্শকদের আয়কর ও ভ্যাট এবং সব রকমের কাস্টমস ডিউটি জিওবি টাকা থেকে পরিশোধ করতে হবে। যার কারণে ২৯১ কোটি টাকা আগের চেয়ে বেশি দরকার হবে। প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণকাজ সংযোজন করা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে ৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেশি দরকার হবে।
এ ছাড়া সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে বর্ণিত কাজের চেয়ে প্রকৌশল পরামর্শকের ডিটেইল্ড ডিজাইনের কাজের পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে, নদীশাসন, স্লাজ বেসিন, থিকনার, সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ ইত্যাদি। এই সব কাজ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ধরা হয়নি। অনুমোদিত ব্যয় ২০১১ সালের রেট শিডিউল ধরে করা হয়েছিল।
এর পর ২০১৪ সালের এবং এখন ২০১৮ সালের দর ধরে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে, যার কারণে ব্যয় বেড়েছে। ২০১৯ সালের মধ্য জুনে এই প্রকল্পের দরপত্র প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি থেকে অনুমোদিত হয়েছে। এখন ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক হাজার ৯৯৫ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, এই প্রকল্পে সক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যয় বাড়ানো যাবে না। আর আগামী ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি সমাপ্ত করতে হবে। আবাসিক ভবন নির্মাণ খরচ কমিয়ে আনতে হবে। অবশ্য প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রস্তাবনায় পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply