সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার জাতীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় প্রবেশ করছেন দলটির নেতা, কর্মী-সমর্থকরা। হাতে দলের ও জাতীয় পতাকা নিয়ে তারা স্লোগান দিতে দিতে যাচ্ছেন সমাবেশ ময়দানে।
যদিও গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। আজ সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলের দিকে যাচ্ছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। মিছিলে সমাবেশ সফল হোক বলে স্লোগান দিচ্ছেন তারা। মেট্রোরেলেও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের ভিড় দেখা গেছে।
দুপুর ২টায় মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকে মঞ্চ দখলে থাকবে দেশের খ্যাতনামা ইসলামি সংগীতশিল্পীদের।
এই সমাবেশের মাধ্যমে মূলত অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নিজেদের শক্তিমত্তার বার্তা দিতে চায় জামায়াত।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ ও বিতর্কের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জামায়াতের এই সমাবেশ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে দলটি। এর আগে বিএনপির সঙ্গে যৌথভাবে কিছু সমাবেশে অংশ নিলেও এককভাবে এটিই তাদের প্রথম সমাবেশ।
দলটির সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন রাজধানীতে বড় বড় সমাবেশ করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ বিভিন্ন ইস্যুতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে। বিএনপি নয়াপল্টনে কয়েক দফা সমাবেশ করলেও জামায়াতে ইসলামী কেবল কারাবন্দি নেতা (বর্তমানে মুক্ত) এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে পুরানা পল্টন মোড়ে একটি সমাবেশ করেছিল।
সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সমাবেশের ডাক দিলেও এর অন্তরালে কৌশলগত নানা হিসাব-নিকাশ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সকল গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। তারা ইসলামী দলগুলোকে পাশে চায় এবং ইসলামপন্থি ভোটারদের একত্রিত করার চেষ্টা করছে। সমাবেশ থেকে নির্বাচনসংক্রান্ত অবস্থান, বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে বার্তা দেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
Leave a Reply