ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গতকাল সোমবার আবারও ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। ভোর থেকে একের পর এক বিমান ও স্থল অভিযানে কমপক্ষে ৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন ছিলেন ত্রাণপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষ, যারা বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণকেন্দ্রে খাবার নিতে গিয়েছিলেন। তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
গাজার মেডিকেল সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক হামলায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে, কারণ এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনপুষ্ট জিএইচএফকে তারা ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করছে। সংস্থাটি গত ২৭ মে থেকে বিতরণ কার্যক্রম শুরু করলেও, ত্রাণ নিতে গিয়ে একের পর এক প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ইতোমধ্যে জিএইচএফের ত্রাণ কেন্দ্রে হামলায় চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় এক হাজার আহত হয়েছেন।
গাজা সিটি থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘একদিকে ইসরায়েল ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে লিপ্ত, অপরদিকে গাজার ভেতরে তাঁবু ও বাড়িঘরে নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘রাফা ও নেটজারিম করিডোরের খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ক্ষুধার্ত মানুষের জটলা দেখা যাচ্ছে। আজ সকালেই এসব জায়গায় ১৩ জন ত্রাণপ্রার্থীকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সোমবার নিহত ৩০ জনের মধ্যে তারাও রয়েছেন।’ গাজায় ক্রমেই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘনিয়ে আসছে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল। ত্রাণ সহায়তা নিতে গিয়ে একের পর এক হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে এখনো ইসরায়েল তাদের হামলা বন্ধের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
Leave a Reply