সম্পদ মহান আল্লাহর অন্যতম নেয়ামত। ইসলামে সম্পদ উপার্জন ও ব্যয়ের বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কৃপণতা ও অপচয়, এই উভয়টি সম্পর্কে ইসলাম নিরুৎসাহিত করেছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি (কৃপণতা করে) নিজের হাত ঘাড়ের সঙ্গে বেঁধে রেখে একেবারে ব্যয়কুণ্ঠ হয়ো না। আবার (অপব্যয়ী হয়ে) একেবারে মুক্তহস্তও হইও না। তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল ২৯)
অপর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পানাহার করো, অপচয় করো না। তিনি (আল্লাহ) অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা আরাফ ৩২) যারা কৃপণতা ও অপচয়ের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে, আল্লাহ তাদের নিজের প্রিয় বান্দা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(রহমানের বান্দা তো তারাই) যারা অপব্যয়ও করে না আবার কৃপণতাও করে না। তাদের পন্থা হয় এই দুটির মধ্যবর্তী।’ (সুরা ফুরকান ৬৭)
ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করার বিষয়টি ইসলামে প্রশংসনীয়। সন্তানদের জন্য কিছু রেখে যাওয়া রাসুল (সা.)-এর পছন্দনীয় ছিল। হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি তোমার ওয়ারিসদের অসহায় এবং মানুষের দুয়ারে ভিক্ষা চেয়ে বেড়াচ্ছে, এ অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া ভালো।’ (সহিহ বুখারি)
ইসলামে সঞ্চয়ের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয় রাসুল (সা.)-এর আরেকটি হাদিস থেকে। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘উত্তম দান তাই, যা নিজ অভাবমুক্ততা রক্ষার সঙ্গে হয়।’ (সহিহ বুখারি)
নবীজিও পরিবারের জন্য পরিমিত সম্পদ সঞ্চয় করেছেন। ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বনু নজিরের খেজুর গাছ বিক্রি করে দিতেন আর পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য রেখে দিতেন। (সহিহ বুখারি) মোট কথা, জীবনের ভারসাম্য রক্ষায় যেমন ব্যয়ের সময় মিতব্যয়িতা প্রয়োজন, তেমনি ভবিষ্যতের প্রয়োজন ও আত্মনির্ভরতার জন্য সঞ্চয়ও প্রয়োজন।
Leave a Reply