1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৫ অপরাহ্ন

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে

ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫

‘স্বাধীনতা’ একটি জাতির জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কাঙ্ক্ষিতও বটে। কোনো মর্যাদাবান জাতি কখনোই স্বাধীনতাহীনতায় বেঁচে থাকতে চায় না। মানুষ তো বটেই, প্রতিটি প্রাণীই স্বাধীনতাপ্রিয়। কিন্তু স্বাধীনতা এমনই এক বস্তু, যা চাইলেই পাওয়া যায় না। অনেক ক্ষেত্রে স্বাধীনতার জন্য জীবন বিসর্জন দিতে হয়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ তাৎক্ষণিক কোনো ঘটনার ফল নয়, তেমনি কারও দয়ার দানও নয়। বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের চাওয়ার সফল পরিণতিই হচ্ছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ। এদেশের মানুষকে একসময় ভীতু বাঙালি বলে উপহাস করা হতো। কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষ বারবার প্রমাণ করেছে, তারা ভীতু নয়; বরং অন্য যে কোনো দেশের মানুষের চেয়ে সাহসী ও স্বাধীনতাপ্রিয়।

তারা মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য জীবন দিতেও যে কার্পণ্য করে না, বারবার এটি প্রমাণ করেছে। মাঝেমধ্যেই স্বাধীনতা বিপন্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। কথায় বলে, স্বাধীনতা অর্জন করা যত কঠিন, স্বাধীনতা রক্ষা করা তার চেয়েও বেশি কঠিন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্বাধীনতা বিপন্ন হতে পারে। স্বাধীনতা বিপন্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে দেশের মানুষকে জীবন দিয়ে হলেও স্বাধীনতা রক্ষা করতে হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বারবার বিপন্নের মুখোমুখি হয়েছে এবং প্রতিবারই জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী সরকারের ১৫ বছরের অবৈধ শাসনের অবসান ঘটেছে।

এজন্য বিপুলসংখ্যক মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যতসংখ্যক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, তারপর স্বাধীন দেশে আর কখনোই ৫ আগস্টের মতো এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে প্রাণ দিতে হয়নি। বাংলাদেশ যতদিন টিকে থাকবে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জনের গৌরব ততদিন টিকে থাকবে। ঠিক একইভাবে স্বৈরাচারবিরোধী সফল আন্দোলনের ইতিহাসে ৫ আগস্টের অর্জিত বিজয়গাথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অথবা ১৬ ডিসেম্বের সঙ্গে ৫ আগস্টের কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু কোনো কোনো মহল থেকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জন এবং ৫ আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাফল্যকে সুকৌশলে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, ৫ আগস্ট হচ্ছে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’। অন্যপক্ষ বলছে, স্বাধীনতা একবারই আসে, যা আমরা ১৯৭১ সালে অর্জন করেছি, ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলে কিছু নেই। যারা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বিজয় দেখেনি, তারাই ৫ আগস্টের বিজয়কে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসাবে আখ্যায়িত করছে।

আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে মনে করি, উভয় বক্তব্যের মধ্যে অতিরঞ্জন ও আবেগ কাজ করছে। ইস্যুটি নির্মোহভাবে আলোচনা করা যেতে পারে। প্রথমেই ব্যাখ্যা করা যাক ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলে কিছু নেই এ কথাটির। স্বাধীনতা বলতে আমরা কী বুঝি? একটি জনপদ যখন বিদেশি শক্তির দ্বারা পরাভূত ও অধিকৃত হয়, তখন সেই অবস্থাকে স্বাধীনতা হরণ বা পরাধীনতা বলা হয়। মর্যাদাবান জাতি কখনোই তাদের নিজ মাতৃভূমির স্বাধীনতাকে বিদেশি শক্তির হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চুপ বসে থাকতে পারে না।

কোনো দেশ একবারই বিদেশি শক্তি দ্বারা পরাভূত ও অধিকৃত হবে এমন কোনো কথা নেই। একটি দেশ একাধিকবার পরাজিত হতে পারে এবং বারবার পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে পারে। কাজেই ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলে কোনো কিছু নেই, কথাটি সর্বাংশে সত্যি নয়।

বাংলাদেশ বারবার স্বাধীনতা হারিয়েছে এবং বারবারই হৃত স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করেছে। স্বাধীনতা দুভাবে অর্জিত হতে পারে। প্রথমত, স্বাধীনতা হরণকারী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে স্বাধীনতা ফিরে পাওয়া যেতে পারে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান ও ভারত স্বাধীন হওয়ার ঘটনাটি।

১৯৫৭ সালে মীরজাফর গংয়ের বিশ্বাসঘাতকতার পরিপ্রেক্ষিতে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটলে মীরজাফর বাংলার সিংহাসনে আসীন হন। ইংরেজরা পেছন থেকে মীরজাফরকে পরিচালনা করতে থাকেন। পরবর্তীকালে ১৭৬৫ সালে বাংলার দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে ইংরেজরা এ দেশের প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তগত করে। এরপর তারা পর্যায়ক্রমে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলও নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয়। এভাবেই বাংলা তথা উপমহাদেশের স্বাধীনতা বিলুপ্ত হয়। কিন্তু ইংরেজরা এদেশের স্বাধীনতা হরণ করতে পারলেও মানুষের মন জয় করতে পারেনি। ইংরেজ শাসনামলের পুরোটা ভারতের বিভিন্ন স্থান, বিশেষ করে বাংলায় ইংরেজবিরোধী আন্দোলন চলতে থাকে।

ইংরেজরা ভারতে তাদের শাসন বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষকেই সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক হিসাবে মনে করত। তাই তারা বৃহত্তর বাংলা প্রদেশকে পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গ এ দুটি অঞ্চলে ভাগ করে। দৃশ্যত ইংরেজরা বাংলা ভাগের পেছনে প্রশাসনিক কাজের অসুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করলেও তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। তারা ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতি অনুসরণ করে ভারতে তাদের শাসন কর্তৃত্ব নির্বিঘ্ন করতে চেয়েছিল। ইংরেজদের বিভিন্ন গোপন নথিতে তাদের এ নীতির উল্লেখ পাওয়া যায়।

ইংরেজরা তাদের একটি গোপন নথিতে উল্লেখ করেছিল, বাংলার মানুষ ভারতের অন্য যে কোনো অঞ্চলের মানুষের চেয়ে চিন্তা-চেনতায় অগ্রগামী। তারা স্বপ্ন দেখে, দিল্লির লাট ভবনে একজন বাঙালি বসে আছে। এ অঞ্চলকে যদি বিভক্ত করা না যায়, তাহলে বাংলার মানুষ এক সময় ইংরেজদের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। দ্বিতীয়ত, যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন, যা আমরা ১৯৭১ সালে প্রত্যক্ষ করেছি।

ইংরেজরা সেই সময় জাতি হিসাবে পৃথিবীর অন্যান্য জাতির চেয়ে উন্নত ছিল। গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকেই ইংরেজরা বুঝতে পারে, এ দেশে তাদের শাসন খুব একটা দীর্ঘ করা যাবে না। কারণ সেই সময় সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ স্বাধীনতার জন্য নানাভাবে আন্দোলন শুরু করে। ১৯৪০ সালে শেরেবাংলা একে ফজলুল হক উত্থাপিত লাহোর প্রস্তাবে সন্নিহিত এলাকা নিয়ে এক বা একাধিক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি অনুমোদিত হয়। পরবর্তীকালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এটিকে ‘প্রিন্টিং মিসটেক’ হিসাবে উল্লেখ করে একাধিক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের বিধান বাতিল করে একক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করেন।

বাংলার মুসলিম নেতারা বৃহত্তর স্বার্থে এ সংশোধিত প্রস্তাব মেনে নেয়। কিন্তু তারা ঠিকই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন যে, প্রায় দেড় হাজার মাইল দূরে অবস্থিত দুটি অঞ্চল, যাদের কৃষ্টি, কালচার ও ভাষার মধ্যে ন্যূনতম কোনো মিল নেই, শুধু ধর্মের ভিত্তিতে এমন দুটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত অস্বাভাবিক রাষ্ট্র কখনোই টিকে থাকতে পারে না। সেই সময় যদি পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গ মিলে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হতো, সেটাই হতো সবচেয়ে যৌক্তিক ও টেকসই একটি রাষ্ট্র।

এক্ষেত্রে হিন্দু নেতাদের দ্বিচারিতা চোখে পড়ার মতো। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ করা হলে ভারতীয় হিন্দু নেতারা এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। একপর্যায়ে ১৯১১ সালে ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয়। সেই হিন্দু নেতারাই আবার ১৯৪৭ সালে বাংলাকে বিভক্ত করার জন্য চেষ্টা চালায় এবং সফল হয়।

জাতিসত্তা গঠন এবং এর ভিত্তিতে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান জন্য যেসব আবশ্যিক উপকরণ প্রয়োজন হয়, তার মধ্যে ভৌগোলিক সংলগ্নতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে কৃষ্টি-কালচার ও ভাষার মিল থাকা, একই আকাক্সক্ষা পোষণ করা এবং চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা প্রয়োজন। জাতি গঠনে ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ বটে, কিন্তু শুধু ধর্মের মিল থাকলেই জাতি গঠন সম্ভব হয় না, তার প্রমাণ হচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে।

পাকিস্তান আন্দোলনের নেতারা এ দেশের মানুষকে বুঝিয়েছিলেন, যেহেতু আমরা ধর্মের দিক থেকে একই ঘরানার মানুষ, তাই আমরা মিলে একটি রাষ্ট্র গঠন করতে পারি। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সেই বিভ্রান্তিকর আশ্বাসে ভুলে পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল; কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষের ভুল ভাঙতে বেশি বিলম্ব হয়নি।

১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। যারা বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই, তাদের বক্তব্যও পুরোপুরি ঠিক নয়। কারণ একটি জনপদ যদি একাধিকবার বিদেশি শক্তির দ্বারা অধিকৃত হয়, তাহলে একাধিকবারই স্বাধীনতা আন্দোলন হতে পারে। ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান রাষ্ট্রের অংশ হিসাবে আমরা একবার স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, যেহেতু তারা বাংলাদেশকে পরাধীন রাষ্ট্রের মতো ব্যবহার করত, তাই আমাদের আবারও স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে হয়েছে।

স্বাধীনতা অর্জন করতে হয় বিদেশি দখলদার বাহিনীর কাছ থেকে আলোচনা অথবা যুদ্ধের মাধ্যমে। আর একই দেশের মধ্যে সরকার পরিবর্তনকে স্বাধীনতা অর্জনের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। একই দেশে নিজস্ব সরকার যখন গণবিরোধী স্বৈরাচারী শাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, তখন সেই সরকারের পতনের মাধ্যমে গণবান্ধব সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করতে হয়। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেশে যে শাসন পরিচালনা করেছে, তার কোনো গণস্বীকৃতি ছিল না। কারণ তার আমলে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে সেই নির্বাচনের কোনো স্বীকৃতি ছিল না।

নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে দলীয় ও ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছিল। তার শাসনামলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার সমতুল্য ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। যারাই স্বৈরাচারী শাসনের বিরোধিতা করতেন, তাদের গুম-খুনের শিকার হতে হতো। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে দেওয়া হয়নি। দেশ কার্যত বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিক্ষার্থীরা প্রথমে সরকারি চাকরিতে কোটা সুবিধা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরে তা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। এবং চূড়ান্ত পর্বে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীরা যদি এভাবে গঠনমূলক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারত, তাহলে সরকার পতন ঘটানো সম্ভব হতো কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ছাত্রদের আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পক্ষে দৃঢ় পদক্ষেপ বলা যেতে পারে।

কোনোভাবেই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। এ আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাই বলে এ আন্দোলনের সফলতাকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ বলা মোটেও সংগত হবে না। আমরা যদি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সফলতাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলি, তাহলে নব্বইয়ের গণ-আন্দোলন, যার মাধ্যমে সামরিক শাসক এরশাদের ৯ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের পতন হয়েছিল, তাকে কী হিসাবে আখ্যায়িত করব? ৫ আগস্টের আন্দোলনের সঙ্গে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের কোনো বিরোধ নেই। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করেই আগস্ট আন্দোলন সফল হয়েছে।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ যেমন ইতিহাসে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে, তেমনি ’৯০-এর এরশাদবিরোধী সফল আন্দোলন এবং ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিস্ময়কর সাফল্য অর্জনকারী আন্দোলনও জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ তিনটি আন্দোলন আমাদের সংগ্রামের ধারাবাহিকতা মাত্র। একাত্তর ছিল স্বাধীনতার আন্দোলন আর নব্বই এবং চব্বিশের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন স্বৈরাচারমুক্ত নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন।

 

ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী : সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com