বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারী ও জনতাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যার দায়ে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও তৌহিদ জং মুরাদসহ ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামলাটি দায়ের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আস-সাবুরের চাচাতো ভাই সাহিদ হাসান ওরফে মিঠু।
নিহত আস-সাবুর (১৬) নওগাঁর মহাদেবপুর থানার মহাদেবপুর গ্রামের নায়েদ ওরফে জাকিরের ছেলে। সে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়ার শিমুলতলা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থেকে জামগড়া শাহীন স্কুলে ১০ দশম শ্রেণিতে পড়তো।
মামলার আসামিরা হলেন- ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডেন্ডাবর এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫৫), আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য টংগাবাড়ি এলাকার মৃত আনোয়ার জংয়ের ছেলে তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ, আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন (৫৪) ও তার বাবা সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গনি কুলু, পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান (৬১), আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন মাদবর (৫৮), ইয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ ভূইয়া (৫০), সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার (৭০) ও আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকারসহ (৫২) ১১৯ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে আস-সাবুর নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করার জন্য তার ভাড়া বাসা শিমুলতলা থেকে বাইপাইলে যায়। পরে দুপুর ২টার দিকে মামলার বাদী খবর পান তার ভাই আস-সাবুর মৃত অবস্থায় বাইপাইল মোড়ে পড়ে আছে। খবর পেয়ে লোকজন নিয়ে বাইপাইল মোড়ে গিয়ে তিনি দেখেন তার ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত নিথর মরদেহ পড়ে আছে। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী সাহিদ হাসান ওরফে মিঠু বলেন, ‘আমরা সাবুরের মরদেহ উদ্ধারের পর খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি ঘটনার দিন এক থেকে দেড় হাজার আন্দোলনকারী বাইপাইল মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও আসামিরা দেশি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীসহ যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও গুলিবর্ষণ করে। আসামিদের মারপিট ও গুলি বর্ষণে আমার ভাই আস সাবুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, শুক্রবার রাতে ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply