বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদত্যাগের সিদ্ধান্ত একদিন আগে নেওয়া হয়েছিল, তবে তা তখন ঘোষণা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ডয়চেভেলের বাংলা বিভাগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একদিন আগে। আমরা কয়েকজন শুধুমাত্র জানতাম যে তিনি ঘোষণা দেবেন, তিনি পদত্যাগ করছেন এবং সংবিধান অনুযায়ী যাতে একটি ট্রানজিশন অব পাওয়ার হয় সেটাই ছিল ওনার প্ল্যান। তবে যখন তারা ঐ গণভবনের দিকে মার্চ করা শুরু করলো। তখন আমরা ভয়ে বললাম যে, আর সময় নেই। তোমার এখনই বেরিয়ে যেতে হবে।‘
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন শেষ পর্যায়ে গণআন্দোলনে রূপ নেয়। কয়েক সপ্তাহের ব্যাপক সংঘর্ষে শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতে হাসিনা সরকার আন্দোলনকারীদের দমনে অধিকতর শক্তি প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে নানা মহল থেকে। ছাত্র-জনতা আন্দোলনের তোপের মুখে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সজীব ওয়াজেদ জয় জানান, বর্তমানে তার রাজনীতিতে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। শেখ পরিবারের কোনো সদস্যরই রাজনীতিতে আসার কোনো কারণ নেই।
এই মুহূর্তে শেখ পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কিংবা রাজনীতিতে আসছেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনবারের মতো আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ক্যু হলো। তিনবারের মতো সবকিছু হারিয়ে বিদেশে থাকতে হলো। আমি আর আমার মা বাদে আমরা সবাই বিদেশে অনেকদিন ধরে আছি। আমরা এখানে সেটেলড। আমাদের এখানে জীবনের কোনো অসুবিধা নেই। আমরা এখানে থাকতে অভ্যস্ত।‘
শেখ হাসিনা ভারত থেকে অন্য কোথাও যাবেন কিনা এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভালো আছেন, এখন দিল্লিতে আছেন। আমার বোন ওনার কাছে আছেন। আমার বোনতো দিল্লিতে থাকেন। তিনি ভালো আছেন, তবে তার খুবই মন খারাপ।‘
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে জয় বলেন, ‘তিনি খুবই দুঃখিত যে দেশের জন্য ওনার বাবা জান দিয়েছেন, পুরো পরিবার জান হারিয়েছে। যেই দেশের জন্য তিনি জেল খেটেছেন, এত পরিশ্রম করেছেন, এত উন্নয়ন করেছেন, সেই দেশের মানুষ তাকে এভাবে অপমান করে বের করে দেবে, তার উপর আক্রমণ করতে যাবে, এটা আমরা কেউ কল্পনা করতে পারিনি।‘
কথা প্রসঙ্গে জয় জানান, মায়ের সঙ্গে দিল্লিতে শিগগিরই দেখা করব আমি।
Leave a Reply