লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আজ মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, আগামী ২৩ জুন অপরাহ্ন থেকে বিএ-২৯০২ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি, চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস)-কে জেনারেল পদবিতে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক ওই তারিখ অপরাহ্ন থেকে ৩ বছরের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ওয়াকার-উজ-জামান। বর্তমানে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৯৮৫ সালে ২০ ডিসেম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে ১৩তম দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। সামরিক জীবনের শুরু থেকেই বিভিন্ন কোর্সে ভাল ফলাফলের ক্রমধারায় তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ, মিরপুর থেকে সাফল্যের সঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ, যুক্তরাজ্য থেকেও গ্রাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় প্রথম শ্রেণীতে মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এমডিএস) সম্পন্ন করেন এবং যুক্তরাজ্যস্থ কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স অব আর্টস ইন ডিফেন্স স্টাডিজ ডিগ্রী অর্জন করেন।
তার সুদীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য সামরিক জীবন কমান্ড, স্টাফ ও প্রশিক্ষকের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। তিনি ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ থেকে ০৮ জুন ২০১০ পর্যন্ত ১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর উপ-অধিনায়ক ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহ দমনে নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২৭ জুলাই ২০১১ থেকে ১১ নভেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত দুই বছরেরও বেশি সময় ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি জিওসি হিসেবে ০২ এপ্রিল ২০১৪ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত তিন বছর নবম পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। এরিয়া কমান্ডার, সাভার এরিয়া ও জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নবম পদাতিক ডিভিশন হিসেবে তিনি টানা তিন বছর অত্যন্ত সফলভাবে বিজয় দিবস প্যারেড ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ এর প্যারেড কমান্ডার এর দায়িত্ব পালন করেন। এই বিরল কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘সেনাগৌরব পদক’ (এসজিপি) এ ভূষিত হন।
স্টাফ হিসেবে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত একটি ব্রিগেড, স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি এন্ড ট্যাকটিকস (এসআইএন্ডটি) এবং সেনাসদরে বিভিন্ন পদবী ও নিয়োগে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে জেসিও এনসিও একাডেমি (জেএনএ), স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি এন্ড ট্যাকটিকস ও বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পিস সাপোর্ট এন্ড ট্রেনিং (বিপসট) এ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সকল পদবীর দেশী-বিদেশী সেনাসদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
Leave a Reply