1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন

রাজনীতিতে আপাতত সক্রিয় হচ্ছেন না খালেদা জিয়া

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০

রাজনীতিতে আপাতত সক্রিয় হচ্ছেন না বেগম খালেদা জিয়া। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সরাসরি দল পরিচালনার দায়িত্বও নিচ্ছেন না তিনি। বড় ছেলে তারেক রহমানই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া পেছন থেকে ভূমিকা রাখবেন অভিভাবকের মতো। দেবেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা । ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নীতিনির্ধারকদের সাথে পরামর্শ করে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে যাবেন বলে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত অসুস্থ খালেদা জিয়াকে গত ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয়। এর আগে তিনি টানা ২৫ মাস কারাবন্দী ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার পরপরই দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন।

তারেক রহমান ২০০৮ সালের পর থেকেই লন্ডনে রয়েছেন। এক-এগারো সরকারের সময়ে কারাগারে চরম অসুস্থ হয়ে পড়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তখন তাকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পেয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে যান। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ। তবে বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে ইচ্ছা থাকলেও দেশে ফিরতে পারছেন না।

তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, দেশে ফিরতে না পারলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দল পরিচালনায় তিনি সরাসরি ভূমিকা রাখছেন। একটি সুসংঠিত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তিনি গড়ে তুলেছেন। দলের নীতিনির্ধারণী সব সিদ্ধান্তই তার কাছ থেকে আসছে। এ ক্ষেত্রে সিনিয়র নেতারা তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন অথবা প্রয়োজন মনে করলে তারেক রহমান নিজেই সবার মতামত নিয়ে বৃহৎ এই দলটি পরিচালনা করছেন।

খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর প্রায় আড়াই মাস কেটে গেছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে প্রথম দুই মাস তিনি বলতে গেলে পরিবারের কয়েকজন সদস্য ছাড়া কাউকে সাক্ষাৎ দেননি। রোজার মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সাক্ষাৎ দেন খালেদা জিয়া। ঈদের দিন রাতে দীর্ঘ আড়াই বছরেরও বেশি সময় পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা একসাথে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেন। করোনার কারণে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিয়ে নেতারা খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। এ ছাড়া দল ও দলের বাইরে প্রভাবশালী দুই-তিনজন নেতাও তার সাথে এরই মধ্যে দেখা করেছেন।

স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে সাক্ষাতের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছুটা কৌতূহল দেখা দিয়েছে, খালেদা জিয়া কি দলীয় রাজনীতিতে আবারো সক্রিয় হচ্ছেন? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অসুস্থতার কারণেই তিনি দলীয় রাজনীতিতে আপাতত সক্রিয় হচ্ছেন না। নেতাদের সাথে এসব সাক্ষাৎ ছিল অনেকটাই সৌজন্য ও নির্দেশনামূলক। প্রয়োজন মনে করলে তিনি দলের নীতিনির্ধারকের মাঝে মধ্যেই এই ধরনের সাক্ষাৎ দিতে পারেন অথবা তিনি কাউকে ডাকতেও পারেন।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নয়া দিগন্তকে বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে থাকুন আর বাইরে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থাকুন, তিনিই দলের প্রধান অভিভাবক। খালেদা জিয়া মানেই বিএনপি । জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রেরণার উৎস তিনি। সাংগঠনিক যেকোনো বিষয়ে তার নির্দেশনা দল বাস্তবায়ন করবে। তবে যেহেতু তিনি অসুস্থ আর দেশে এখন রাজনীতির পরিবেশ নেই, সে কারণে তিনি সরাসরি দল পরিচালনায় আসছেন না।

ওই নেতার কাছে প্রশ্ন ছিল, সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে রাজনীতি করতে পারবেন না, এমন কোনো শর্ত ছিল কিনা। তিনি নিশ্চিত করে বলেন, না এমন কোনো শর্ত নেই। খালেদা জিয়া অসুস্থ। উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলাই বিএনপির প্রধান অগ্রাধিকার।

মুক্তির পর এখনো খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা শুরু হয়নি। করোনার কারণেই সেটি সম্ভব হচ্ছে না। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় দলীয় চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি টিম রয়েছে। তাদের এক-দুইজন নিয়মিত খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ফলোআপ করছেন। এ ছাড়া পুত্রবধূ জোবায়দা রহমান নিয়মিতই তার চিকিৎসার তদারকি করছেন।
এদিকে ছয় মাসের মুক্তি হিসাব করলে সরকারের নির্বাহী আদেশের মেয়াদ আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া এই আদেশের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করবেন। এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে বিএনপি। এরই মধ্যে দলের একাধিক আইনজীবীর সাথে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
নেতারা বলছেন, করোনার কারণে পরিস্থিতি ভিন্ন থাকায় এখনো কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া সম্ভব হয়নি খালেদা জিয়ার। সে কারণে চিকিৎসার বিষয়টিকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সেদিক থেকে ছয় মাস সময় পার হলেও প্রথমত তার সুচিকিৎসার কাজটিই অগ্রগণ্য থাকবে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, যে কারণে ম্যাডামকে মুক্তি দেয়া হয়েছে, সে কারণ এখনো রয়েছে। করোনার কারণে ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়নি। তার চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয়নি। স্বাভাবিক কারণে প্রয়োজনবোধে আবারো সরকার সময় বৃদ্ধি করতে পারে মানবিক কারণে। তবে এটির জন্য আবেদন করতে হবে। যেহেতু তার মুক্তির প্রক্রিয়াটি নির্বাহী আদেশে হয়েছে, সে কারণে আবারো আবেদন করার মধ্য দিয়ে সময় বাড়ানোর অনুরোধ করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com