শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এলটিটিইর প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরন এখনো জীবিত বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে শ্রীলঙ্কা। প্রভাকরনের ডিএনএ পেশ করে শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তামিলনাড়ুর নেতার দাবি নস্যাৎ করেছে।
তামিল জাতীয়তাবাদী নেতা পি নেদুমুরন সোমবার এক বিস্ফোরক দাবিতে বলেন, প্রভাকরন জীবিত এবং তিনি খুব শিগগিরিই মানুষের সামনে আসবেন। এই দাবির কয়েক ঘণ্টা পার হতে না হতেই জবাব এলো শ্রীলঙ্কা থেকে।
উল্লেখ্য, তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রভাকরণ সম্পর্কে ওই বিস্ফোরক দাবি করেন পি নেদুমুরন। ‘লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ইলাম’ শীর্ষক শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের নেতা ২০০৯ সালে এক হামলায় মারা গিয়েছিল বলে জানা যায়। ওই তথ্যই ফের পেশ করে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী জানিয়েছে,’এটা নিশ্চিত যে ২০০৯ সালের, ১৯ মে প্রভাকরণ মারা যান। ডিএনএই তার প্রমাণ।’
শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামিলনাড়ুর ওই নেতার বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কা রাষ্ট্র হওয়ার পরে ১৯৮৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তাদের গৃহযুদ্ধের মূল কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন প্রভাকরন। শ্রীলঙ্কার বুকে যে তামিল নেতা স্থানীয় তামিলদের রক্ষাকর্তা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। তার অভিযোগ ছিল, শ্রীলঙ্কার বুকে সিংহলি বনাম তামিল সংঘাতের জেরে বহু তামিল সেদেশে নিষ্পেষিত হচ্ছিল। ওই ঘটনার পর শ্রীলঙ্কায় তামিলদের রক্ষা করতে গেরিলা যুদ্ধের রাস্তা নেয় লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল। যদিও শ্রীলঙ্কায় তামিলদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ সেভাবে কোনো দিনওই স্বীকার করেনি কলম্বো। তবে ওই দেশের এই দীর্ঘ যুদ্ধ প্রভাব ফেলে ভারতের দাক্ষিণাত্যে।
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর হাতে প্রভাকরনের নিহত হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। আর এর সাথে সাথেই শ্রীলঙ্কায় এই দীর্ঘ মেয়াদি গৃহযুদ্ধের শেষ হয়। উল্লেখ্য, তার আগে পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার উত্তর ও পূর্ব দিকের অংশ তামিলদের জন্য ছিনিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে লড়াই করে প্রভাকরন ও তার দল এলটিটিই। পৃথক তামিল রাষ্ট্রের দাবি জানায় প্রভাকরন। তবে তাতে সঙ্গত কারণেই রাজি হয়নি শ্রীলঙ্কা সরকার।
উল্লেখ্য, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন প্রভাকরন। পরে শ্রীলঙ্কার বহু রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের শেষে সেদেশের উত্তরে মুল্লিভায়াকালের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রভাকরনের লাশ। আর ওই লাশ শনাক্ত করেন অন্য এক এলটিটিই সদস্য করুনা আম্মান।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
Leave a Reply