তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজার হাজার নিহতের ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এত হতাশার মাঝেও এসেছে ‘অলৌকিকভাবে’ জীবিত উদ্ধারের কিছু গল্প। এটি এমনই এক গল্প।
২৭ জানুয়ারি নেকলা কামুজ যখন তার দ্বিতীয় ছেলের জন্ম দেন, তখন তিনি তার নাম রাখেন ইয়াগিজ, যার অর্থ ‘সাহসী’।
ঠিক ১০ দিন পরে, স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে, নেকলা তার ছেলেকে দক্ষিণ তুরস্কের হাতায় প্রদেশে নিজ বাড়িতে খাওয়াচ্ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যান। নেকলা ও তার পরিবার সামান্দাগ শহরে একটি পাঁচতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় থাকতেন।
নেকলা কামুজ বলেন, ‘এটি বেশ সুন্দর একটি ভবন এবং তিনি ওই ভবনে নিজেকে নিরাপদ মনে করতেন। ওই দিন সকালে তিনি জানতেন না যে এলাকাটি ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে, প্রতিটি মোড়ে থাকা ভবনগুলো লণ্ডভণ্ড-ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, ‘যখন ভূমিকম্প শুরু হয়েছিল, আমি আমার স্বামীর কাছে যেতে চেয়েছিলাম যিনি অন্য ঘরে ছিলেন। তিনিও সেটাই চেয়েছিলেন। কিন্তু যখন তিনি আমাদের অন্য ছেলেকে সাথে নিয়ে আমার কাছে আসার চেষ্টা করেছিলেন, তখন ওয়ারড্রবটি তাদের উপর আছড়ে পড়ে। তখন তাদের পক্ষে নড়াচড়া করা অসম্ভব ছিল।’
তিনি বলছিলেন, ‘ভূমিকম্প যখন ভয়াবহ রূপ নেয় তখন দেয়াল ভেঙে পড়ে। ঘরটি ভীষণ কাঁপছিল এবং ভবনটি জায়গা থেকে সরে যাচ্ছিল। যখন কম্পন থামে, আমি বুঝতে পারিনি যে আমি একতলা নিচে পড়ে গিয়েছি। আমি তাদের নাম বলে চিৎকার করেছিলাম, কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি।’
৩৩ বছর বয়সী এই নারী নিজেকে তার বাচ্চা বুকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কার করেন।
তার পাশে পড়ে থাকা ওয়ারড্রবটির কারণে কংক্রিটের একটি বড় স্ল্যাবে পিষ্ট হতে হতে তারা বেঁচে যান। প্রায় চার দিন তারা দু’জন এই অবস্থায় ছিলেন।
সূত্র : বিবিসি
Leave a Reply