স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা। তাই ভয়ডরহীন কানিজ ফাতিমা আনিসা গড়ে তোলেন একটি প্রতারক চক্র, যারা টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে তুলে নিত অন্তরঙ্গ ছবি। পরে সেগুলো দিয়ে ব্ল্যাকমেইল কিংবা হত্যার ভয় দেখিয়ে আদায় করত মোটা অঙ্কের টাকা। রংপুরের একাধিক ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আনিসা নিজেও হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। আর সেই অভিযোগে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহানগরীর ঠিকাদারপাড়া বিকন মোড় এলাকার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই নারী রংপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত পরিদর্শক হাবিবুর রহমানের স্ত্রী।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানান, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় ও টর্চারশেলে নির্যাতনের অভিযোগে গত রবিবার রাতে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড় এলাকার একটি বাড়ি থেকে শাহারুখ করিম অনিক ও তার স্ত্রী আসমানী আক্তারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৩।
তাদের বিরুদ্ধে পরে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। আদালতে দেওয়া তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেই কানিজ ফাতিমা আনিসার নাম উঠে আসে। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিকন মোড় এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার দুপুরে কানিজ ফাতিমা আনিসাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি আব্দুর রশিদ।
হাবিবুর রহমানের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি নিজেকে পুলিশ পরিদর্শক পরিচয় দেন। তবে আনিসার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই নারী তার স্ত্রী নন বলেই ফোনটি কেটে দিয়ে বন্ধ করে দেন। জানা গেছে, আনিসার বাড়ি বগুড়ার সোনাতলায় ও হাবিবুর রহমানের বাড়ি কুড়িগ্রামে। তারা নগরীর বিকন মোড়ের ছয়তলা একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ভাড়া থাকেন।
র্যাব ১৩-এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ জানান, বেশ কিছুদিন থেকে শাহারুখ করিম অনিক ও তার স্ত্রী আসমানী আক্তারসহ আরও চার-পাঁচজন প্রথমে নগরীর বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করতেন। পরে তাদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে কৌশলে নিজেদের আস্তানায় নিয়ে যেতেন। এর পর সেখানে অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের টাকা। এ ছাড়াও হত্যার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়াসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
Leave a Reply