ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামে কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে এক ধর্ষক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডিত ধর্ষক এই যুবকের নাম সোহেল ঘরামী (২৮)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শেখ. মো: তোফায়েল হাসান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিকে ধর্ষণের শিকার কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। সেই কন্যা সন্তানের বয়স এখন ৫ বছর। ধর্ষণের কারণে জন্ম নেয়া এই সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষক সোহেল ঘরামী ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামের আইয়ুব আলী ঘরামীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরীর বাবা-মা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। এ কারণে মেয়েটি তার মামার বাড়িতে থাকতো। কিশোরীর মামা বাড়ির পাশেই ধর্ষক সোহেল ঘরামীদের বাড়ি। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অভিযুক্ত সোহেল ঘরামী ২০১২ সালের ৩মে থেকে ভুক্তভোগী কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ফলে মেয়েটি চার মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে।
বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী ও কিশোরীর পরিবার সোহেলকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু সোহেল সন্তান নষ্ট না করা পর্যন্ত বিয়ে করবে না বলে তাদের জানিয়ে দেয়। সে মেয়েটিকে কিছু টাকা দিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলতেও বিভিন্ন ভাবে চাপ দেয়।
একপর্যায়ে কিশোরীর বাবা ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত নলছিটি থানার ওসিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। পুলিশের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আদালত সোহেলের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন। পরে ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি আসম মোস্তাফিজুর রহমান মনু। তিনি বলেন, নির্যাতিত মেয়েটি তার পাঁচ বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়ে মা-বাবার সংসারে অসহায় অবস্থায় আছে। তাই আদালত শিশুটির ভরণ পোষণের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রকে নির্দেশ দেন।
Leave a Reply