টিকা দিয়েও করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে টালমাটাল অবস্থা ভারতের। গত কয়েক দিন ধরেই দেশটিতে প্রতিদিন সংক্রমণের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
রোববারও একদিনে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে বিশ্বে সংক্রমণ বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই এখন ভারতের নাম।
বিশ্বে সংক্রমণ তালিকায় ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে তিন থেকে দুই নম্বর স্থানে উঠে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ এই দেশটি।
আর লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল এখন তালিকায় তিনে নেমে গেছে। সোমবার করোনার আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ওয়ার্ল্ডওমিটারসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক কোটি ৩৫ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৯ জন। মারা গেছেন এক লাখ ৭০ হাজার ২০৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ৯০৪ জন। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র। রোববার এ রাজ্যে একদিনে ৬৩ হাজার ২৯৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ৩৪৯ জন। ভারতের প্রায় ৫২ শতাংশ করোনা রোগীই মহারাষ্ট্রের। সোমবার সকাল ৭টা থেকে মহারাষ্ট্রে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ছত্তিশগড়, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও ভয়াবহ। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বেশিরভাগ রাজ্যেই রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।
নতুন বিধিনিষেধ জারি করেছে দিল্লি সরকার। সেখানে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। এ ছাড়া রেস্টুরেন্ট, থিয়েটার, গণপরিবহন, বিয়ে এবং শেষকৃত্যের মতো অনুষ্ঠানে লোকজনের অংশগ্রহণে সীমিত করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্বে সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিক থেকে এখনও শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৯ জন মারা গেছেন। এ ছাড়া শনাক্ত হয়েছে তিন কোটি ১৯ লাখ ১৮ হাজার ৫৯১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ২৭৬ জন।
আক্রান্তের তালিকায় তৃতীয় স্থানে নেমে গেলেও মৃত্যুর দিক থেকে এখনও দুইয়ে রয়েছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৩ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন তিন লাখ ৫৩ হাজার ২৯৩ জন।
সংক্রমণের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ফ্রান্স, পঞ্চম রাশিয়া, ষষ্ঠ যুক্তরাজ্য, সপ্তম তুরস্ক, অষ্টম ইতালি, নবম স্পেন এবং দশম স্থানে রয়েছে জার্মানি। বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। দেশটিতে করোনায় প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি। ওই বছরের ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনা প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে। ওই বছরেরই ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
Leave a Reply