পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে গতকাল কলকাতায় ব্রিগেড ময়দানে জনসভায় অংশ নেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করেন মোদি। তবে মমতাও থেমে ছিলেন না, জলপাইগুড়িতে আরেক জনসভা থেকে জবাব দেন তিনি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা।
ব্রিগেড সভার শুরুতেই নন্দীগ্রাম থেকে মমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মমতাকে তিনি হারিয়েই ছাড়বেন। নির্বাচনী প্রচারে এটি সাধারণ বক্তব্য। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি এ থেকে সরে গিয়ে রীতিমতো কটাক্ষের সুরে মমতাকে তুলাধুনা করেন। কিছুদিন আগে জ্বালানি তেলে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মমতা স্কুটি র্যালি করেন। এ নিয়ে মোদি বলেন, ‘কিছু দিন আগে স্কুটি সামলাচ্ছিলেন দিদি। সবাই ভয় পাচ্ছিলেন, আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত না পান। ভাগ্যিস পড়ে যাননি। নইলে যে রাজ্যে স্কুটি তৈরি হয়েছে, সেই রাজ্যকেই শত্রুতা বানিয়ে ফেলতেন। তাই ভালো হয়েছে পড়ে যাননি। কিন্তু ভবানীপুর যেতে যেতে নন্দীগ্রামের দিকে কী করে ঘুরে গেল স্কুটি? আমি চাই না আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত পান। কিন্তু স্কুটি যখন নন্দীগ্রামেই গিয়ে পড়েছে, তখন আমরা আর কী করব।’ এ ছাড়া মোদি আরও বলেন, ‘দিদি হিসেবে ১০ বছর আগে মমতাকে মমতায় বসিয়েছিলেন বাংলার মানুষ। কিন্তু মমতা শুধু একজন ভাইপোর পিসি হয়ে রইলেন। মোদির কথায়, ‘১০ বছর পর মানুষ জবাব চাইছেন। দিদি হিসেবে আপনাকে বেছে নিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু আপনি নিজেকে শুধু ভাইপোর পিসি হিসেবেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছিলেন।’
এদিকে মোদি যখন ব্রিগেড জনসভায় মমতাকে আক্রমণ করছিলেন সেই সময় শিলিগুড়ি থেকে জবাব দিচ্ছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মোদী যখন ফাঁকা ব্রিগেডে, আমি তখন রাস্তায়। কারণ রাস্তাই আমাকে রাস্তা দেখায়।’ গতকাল রবিবার শিলিগুড়িতে রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মিছিল ও সভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মমতা। শেষে একটি সভাও করেন। আর সেখান থেকেই ব্রিগেডে মোদির ভাষণের সরাসরি জবাব দেন তিনি। তার বার্তা, ‘এবারের নির্বাচন অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন। অস্তিত্ব রক্ষা করতে না পারলে বাংলা ভাগ করবে বিজেপি।’ মমতা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে শুধু কুৎসা করতে আসেন। ব্রিগেডে বাংলা নিয়ে কথা বলার আগে তার (মোদি) উচিত রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জবাব দেওয়া। কেন গ্যাসের দাম বাড়ছে? পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ছে? মোদিকে আগে সেই জবাব দিতে হবে। রান্নাঘরে আগুন লাগালে মা-বোনেরা ছেড়ে কথা বলবেন না।’
প্রসঙ্গত, এবারের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে টানটান উত্তেজনা শুরু হয়েছে। রাজ্যে সরকার গঠনের লক্ষ্য নিয়ে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। অন্যদিকে ক্ষমতা রক্ষা করতে মরিয়া তৃণমূল। যা গতকাল মমতার কণ্ঠেও উঠে এলো ‘অস্তিত্ব রক্ষার’ নির্বাচনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।
Leave a Reply