দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশীদ আল মাকতুমের মেয়ে প্রিন্সেস লতিফা ২০১৮ সালে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। পরে বন্ধুদের কাছে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন তিনি। সেই ভিডিও বার্তায় তাকে ‘জিম্মি’ করে রাখা হয়েছে বলে তিনি নিজের পিতার বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন। এছাড়া নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বলেও ভিডিও বার্তায় বলেন তিনি। আজ বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি থেকে এ খবর জানা গেছে।
বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানকে দেওয়া ফুটেজে রাজকুমারী লতিফা আল মাকতুম বলেন, তিনি বোটে করে পালিয়ে যাওয়ার পর কমান্ডোরা তাকে মাদকাচ্ছন্ন করে এবং আবার তাকে বন্দীশালায় নিয়ে আসে। গোপনে পাঠানো বার্তাগুলো আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তার বন্ধুরা জাতিসংঘকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে দুবাই এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছিল, তিনি তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে নিরাপদেই রয়েছেন। লতিফার বর্তমান অবস্থা এবং তার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় প্রিন্সেস লতিফা বলেছেন, ‘নৌকা থেকে যে সেনারা তাকে আটক করেছিল তাদেরকে তিনি লাথি মেরেছিলেন ও তাদের সঙ্গে মারামারি করেছিলেন। পরে তাকে অচেতন করার ওষুধ দেওয়ার পর তিনি জ্ঞান হারান এবং তাকে একটি ব্যক্তিগত বিমানে তোলা হয়।’ বিমানটি দুবাইয়ে অবতরণের আগ পর্যন্ত অচেতন অবস্থায় ছিলেন বলেও ওই ভিডিও বার্তায় বলেন তিনি।
ওই ভিডিও বার্তায় তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের পাহারায় যে ভিলাতে আটক ছিলেন তিনি সেই ঘরটির জানালাগুলো বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা বা আইনি সহায়তা নেওয়ারও সুযোগ ছিল না।’
জাতিসংঘের সাবেক মানবাধিকার কমিশনার ও আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন ২০১৮ সালে রাজকুমারীর সঙ্গে দেখা করার পর তাকে একজন ‘বিপদগ্রস্ত তরুণী’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। আর এখন বলছেন, রাজকুমারীর পরিবার তাকে ‘ভয়াবহভাবে ধোঁকা দিয়েছিল’।
উল্লেখ্য, বর্তমানে লতিফার বয়স ৩৫ বছর। কিন্তু তিনি প্রথম পালানোর চেষ্টা করেন ১৬ বছর বয়সে। লতিফার পিতা শেখ মোহাম্মদ বিন রশীদ আল মাকতুম বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রপ্রধানদের একজন। তিনি দুবাইয়ের শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস-প্রেসিডেন্ট।
Leave a Reply