বাংলাদেশি গৃহকর্মী আবিরন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সৌদি আরবের নাগরিক গৃহকর্ত্রী আয়েশা আল জিজানীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। রোববার রিয়াদের ক্রিমিনাল কোর্ট এ রায় ঘোষণা করেন। দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রায়ে বলা হয়, মামলার প্রধান আসামি গৃহকর্ত্রী আয়েশা আল জিজানী সুনির্দিষ্টভাবে ইচ্ছাকৃত এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন। তাই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর গৃহকর্তা বাসেম সালেমের বিরুদ্ধে আলামত ধ্বংসের অভিযোগ, আবিরন বেগমকে নিজ বাসার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় কাজে পাঠানো ও চিকিৎসার ব্যবস্থা না করায় পৃথক পৃথক অভিযোগে মোট ৩ বছর ২ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করেন।
মামলার অপর আসামি সৌদি দম্পতির কিশোর ছেলে ওয়ালিদ বাসেম সালেমের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার কোনো প্রমাণ পাননি আদালত। তবে আবিরন বেগমকে বিভিন্নভাবে অসহযোগিতা করায় তাকে সাত মাস কিশোর সংশোধনাগারে থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তার এই তিন আসামি আদালতের কাছে আগেই জামিন চেয়েছিল। কিন্তু আদালত তাদের জামিন দেননি।
নিহত আবিরনের পরিবার বলে আসছে, তারা এই ঘটনায় কোনো সমঝোতা চায় না। তাদের দাবি, প্রাণের বদলে প্রাণ।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪০ বছরের বেশি বয়সী আবিরনকে পিটিয়ে, গরম পানিতে ঝলসে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে খুন করা হয়। সাত মাস সেখানকার এক মর্গে ছিল আবিরনের মরদেহ।
২০১৭ সালে খুলনার পাইকগাছার মেয়ে আবিরন স্থানীয় দালাল রবিউলের কথায় ঢাকার একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ তাকে হত্যা করা হয়। তবে দীর্ঘদিনেও পরিবার আবিরনের মরদেহ পাচ্ছিল না। পরিবারটি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির সহায়তায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর তার মরদেহ দেশে আনা হয়।
মরদেহের সঙ্গে থাকা আবিরনের মৃত্যুসনদে মৃত্যুর কারণের জায়গায় লেখা ছিল মার্ডার (হত্যা)।
Leave a Reply