সাতক্ষীরায় ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট চালানো সিরিজ বোমা হামলা মামলার রায় আজ বুধবার ঘোষণা করা হবে।
রায় ঘোষণা করবেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মোঃ শরিফুল ইসলাম।
দেশব্যাপী উগ্রবাদী সংগঠন জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার সময় সাতক্ষীরার পাঁচটি স্থানে এ হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা ছয় মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন মঙ্গলবার শেষ হয়। পরে বিচারক শরিফুল ইসলাম বুধবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সিরিজ বোমার ছয়টির প্রতিটি মামলায় ২৪ আসামির বিরুদ্ধ চার্জশিট দেয়া হয়। তাদের মধ্যে সাতক্ষীরা শহরতলির বাঁকাল ইসলামপুরের নাসিরুদ্দিন দফাদার ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর মস্তিষ্কের রক্ষক্ষরণে জেলা কারাগারে মারা যান। চার্জশিটে নাম থাকা বাকি আসামিদের মধ্যে চারজন এখনো পলাতক রয়েছেন।
গ্রেফতার আসামিরা দেশের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থান করায় মামলার রায় হতে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর সময় লেগে গেল।
এদিকে, মঙ্গলবার জেলখানা থেকে নয় আসামিকে আদালতে আনা হয়। এই মামলায় আগেই জামিনে থাকা ১০ আসামিও আদালতে হাজিরা দেন।
পলাতক আসামিদের মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের ফখরুদ্দিন রাজি, সদরের সাতানির আবুল খায়ের, খড়িবিলার মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল ও কলারোয়ার পাটুলি গ্রামের নাঈমুদ্দিন রয়েছেন।
মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক শেষে জামিনে থাকা ১০ জনের মধ্যে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে মমতাজউদ্দিন ও নূর আলী মেম্বরের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। বাকি আটজনের জামিন বাতিল করে মোট ১৭ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ জানান, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সাতক্ষীরা শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়সহ পাঁচটি স্থানে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে।
ঘটনার দিনই প্রত্যক্ষদর্শী বাঁকাল ইসলামপুর চরের রওশানের বিবরণ মতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত বাঁকালের দলিলউদ্দিন দফাদারের ছেলে নাসিরুদ্দিন দফাদার আটক হন। তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, রসুলপুরে জেএমবির ঘাঁটি চিহ্নিত এবং ১৩ জনকে আটক হয়। পরে তাদের ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের সাতক্ষীরায় ফিরিয়ে আনা হয়।
পরে, ২০০৬ সালের ১৩ মার্চ এসব মামলায় ২৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। সে বছরই মামলাগুলো খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। কিন্তু যথা সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৭ সালের ২৫ জুন মামলাগুলো খুলনা থেকে ফেরত আসে সাতক্ষীরায়। এরপর ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে মামলাগুলোর বিচার কাজ শুরু করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে শায়খ আবদুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় চার্জশিট করার সময় তাদের এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়।
সূত্র : ইউএনবি
Leave a Reply