ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসছেন আগামী মাসে। আসন্ন সফরেও হচ্ছে না বহুল আকাক্সিক্ষত তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে অংশ নিতে ২৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসতে পারেন।
চার দিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে গতকাল পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের জানান, পশ্চিমবঙ্গে মার্চ-এপ্রিলে নির্বাচন। নির্বাচনের সময়ে এগুলো করা কঠিন। যেহেতু মার্চে নির্বাচন, এ সময়ে করা সম্ভব নয়। সেদিক থেকে একটা চ্যালেঞ্জ আছে।
আরেক প্রশ্নে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ইলেকশন হবে। কিন্তু আমাদের চাওয়ার জায়গাটা যদি অপূর্ণ থেকে যায়, তা হলেও হতাশা আসে- এটা স্বাভাবিক। তবে আমরা আশাবাদী থাকতে চাই। আমরা বলেছি, আমাদের দেশে সবার মধ্যে প্রত্যাশা থাকে, যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। আমরা আরও বলেছি, আমি দেশে গেলেও কিন্তু আমাদের দেশের সাংবাদিকরা প্রথম (প্রশ্ন) করবেন। এটা যেহেতু প্রোট্র্যাক্টেড ইস্যু। এটা চট করে কিছু বলে দিবে, নেগেটিভ কিছু বলবে তাও না। তারা পরিমিত পথে কথা বলেছে। তাতে করে তারা যে আন্তরিক না, সেটা বোঝা যায়নি। কিন্তু আমরাও আমাদের পয়েন্টটা শক্ত করেই বলেছি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২৬ মার্চ সকালে বা দুপুরে এলে বিকাল থেকে আমাদের মূল অনুষ্ঠান হবে। সেখানে অংশগ্রহণ করে রাতে হয়তো অফিসিয়াল ব্যাংকুয়েট বা যা করার করব। সে ক্ষেত্রে পরদিন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক বা উনি যদি ঢাকার বাইরে যেতে চান, আমরা যদি শিডিউল করতে পারি। এর পর তিনি ফিরে যাবেন। ঢাকার বাইরে জাতির পিতার সমাধিস্থল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার বিষয়টি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব। গত বছরের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে মুজিববর্ষ উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, তাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ছিলেন আমন্ত্রিত। করোনা মহামারী রূপ নেওয়ায় পর ওই অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়, বিদেশি অতিথিদেরও আসা হয়নি। তবে এর পর ভার্চুয়াল বৈঠকে যুক্ত হয়েছিলেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, ফেব্রুয়ারির শেষে ঢাকায় আসতে পারেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের আগে ?দুই দেশের স্বরাষ্ট্র, পানিসম্পদ, বাণিজ্য ও নৌপরিবহন সচিবদের বৈঠক হবে। এর মধ্যে পানিসম্পদ সচিবদের বৈঠক দিল্লিতে আর বাকি তিনটি বৈঠক হবে ঢাকায়। করোনার টিকা উপহার দেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই চিঠি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিয়েছেন বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন।
মোদির সফর কেবল উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না মন্তব্য করে মোমেন বলেন, মোদির সফরে মুজিবনগর থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তাবিত স্বাধীনতা সড়ক, ফেনী সেতু এবং মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ডিজিটাল প্রদর্শনীর উদ্বোধন হতে পারে। এর বাইরে সফর ঘিরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাসহ পাঁচ-ছয়টি সমঝোতা স্মারক আলোচনার টেবিলে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply