রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজের ভারতীয় এক শিক্ষার্থী সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার পর যেকোনো সময় এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম ইকবাল জাফর শরীফ (২৪)।
নিহত ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। তার বাবার নাম মোজাম্মেল হোসেন পিন্টু। ইকবাল জাফর বারিন্দ মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজশাহী বারিন্দ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বি.কে দাম জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে ইকবাল ভারতেই ছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি বাংলাদেশে এসে রাজধানী ঢাকায় তার এক বন্ধুর কাছে ছিলেন। গত বুধবার (২০ জানুয়ারি) তিনি রাজশাহী গিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত হোস্টেলে থাকার জন্য ওঠেন। হোস্টেলে আগে প্রতি কক্ষে দুজন বিদেশি শিক্ষার্থী থাকলেও এখন করোনা পরিস্থিতির কারণে একজন করে শিক্ষার্থী রাখা হয়। শুক্রবার রাতে ইকবাল জাফর তার নিজের হোস্টেলর কক্ষেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
অধ্যক্ষ আরও জানান, সন্ধ্যার পর বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই বাইরে যান। রাতে তারা ফিরে ইকবালকে সিলিং ফ্যানে ঝুলতে দেখেন। এরপর তারাই মরদেহ নামিয়ে হোস্টেল থেকে প্রায় ১৫০ গজ দূরে থাকা বারিন্দ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। কিন্তু জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইকবালের মানসিক সমস্যা ছিল। এর আগে দুবার তাকে চিকিৎসকের কাছেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার আত্মহত্যার বিষয়টি ভারতে তার মামা এবং রাজশাহীতে অবস্থিত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ে জানানো হয়েছে। হাসপাতালে পুলিশও আছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন বলেও জানান কলেজ অধ্যক্ষ ডা. বি. কে দাম।
এ ব্যাপারে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুম মুনীর জানান, খবর পেয়ে তারা কলেজের হোস্টেলে পৌঁছেছেন। বর্তমানে মৃতের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। হোস্টেলের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে চাদর পেচিয়ে ইকবাল আত্মহত্যা করেছেন বলে তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে জেনেছেন। এখন এই ব্যাপারে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষ হলে মৃতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ছাড়া এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার থানার এই পুলিশ কর্মকর্তা।
Leave a Reply