1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন

মিন্নির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ, জরিমানা স্থগিত

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০

বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় খালাস চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রায়ে জরিমানা করে দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিত করেছেন আদালত। আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আপিল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন মিন্নির আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।

আদেশের বিষয়টি আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, মিন্নির পক্ষে খালাস চেয়ে আজ আপিল কোর্টে উপস্থাপন করা হয়েছিল। আদালত আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন এবং বিচারিক আদালতের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা অর্থদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। অপর এক আসামি মোহাইমেন ইসলাম সিফাতের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে রিফাত হত্যার রায়ে দণ্ড পাওয়া তিন আসামির বিষয়েও গত ১৩ অক্টোবর একই আদেশ দেন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ। ওই তিন আসামি হলেন- আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মো. হাসান এবং মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজীর আপিল করার তথ্য জানা গেলেও কোনো আদেশ হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।

নিয়ম অনুযায়ী, এ মামলার পেপারবুক তৈরি হবে। পেপারবুক তৈরি হলে প্রধান বিচারপতি মামলার শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করেন। তখন এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হবে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালত। রায়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জন অভিযুক্তকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া বেকসুর খালাস দেওয়া হয় এ মামলার অপর চার আসামিকে। বর্তমানে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে মিন্নিকে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। খালাস পেয়েছেন- মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন।

গত ৪ অক্টোবর ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছায়। পরে ৬ অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করেন।

আইনজীবীরা জানান, ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন। যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। ওই নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড, মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী এবং তাদের সহযোগীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রিফাতের স্ত্রী মিন্নি। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।

এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা। পরে ২ জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রধান আসামি নয়ন বন্ড নিহত হন।

হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর গত বছরের ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওইদিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন। ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক, দুইভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন রয়েছেন। গত ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।

বিচার শেষে গত ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। রায়ে ছয়জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। বাকি তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com