সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ মেহেদী হাসান নাইচের বিরুদ্ধে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। গত মঙ্গলবার কলারোয়া থানায় ওই স্কুলছাত্রী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার খবর শুনে ওই স্কুলছাত্রীর বিরুদ্ধে গত বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নাইচ।
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শেখ মেহেদী হাসান নাইচ (২৭) উপজেলার পরানপুর গ্রামের শেখ মোশারফ হোসেনের ছেলে।
উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের দশম শ্রেণির ছাত্রী ওই ভুক্তভোগী জানান, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রলীগ নেতা শেখ মেহেদী হাসান নাইচ তাকে প্রায় চার বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছেন। সম্প্রতি পরিবারের চাপে মোটা অংকের যৌতুক নিয়ে তিনি অন্যত্র বিয়ে করেন।
স্কুলছাত্রী জানান, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তার মা-বাবা বাড়িতে না থাকায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাইচ তাকে প্রথমবারের মতো ধর্ষণ করেন। এভাবে প্রায় চার বছর চলতে থাকায় সর্বশেষ গত ৩ জুলাই রাতে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতা নাইচ ধর্ষণ করেন এবং অসদাচরণ করেন। এ সময় তিনি প্রতারণার শিকার হতে যাচ্ছেন বলে সন্দেহ করেন। পরে পরিবারের সবাইকে জানিয়ে তিনি কয়েক দফা ছাত্রলীগ নেতা নাইচদের বাড়িতে যান। নাইচসহ তার পরিবারের লোকজন তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন।
পরে বিষয়টি কলারোয়া উপজেলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান দুই পক্ষকে ডাকার পরও বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় অবশেষে গত মঙ্গলবার তিনি বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় নারী নির্যাতন দমন আইনে নাইচের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, মামলার খবর জানতে পেরে গত বুধবার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাইচ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই স্কুলছাত্রীকে ‘চরিত্রহীন মেয়ে’ বলে উল্লেখ করেন। এ সময় নাইচ বলেন, ‘ওই চরিত্রহীন মেয়ে তার রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য চক্রান্ত করে আসছে।’
এ বিষয়ে জানতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান নাইচকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, মেয়েটি তাদের বাড়িতে দুই দফা বিয়ের দাবি নিয়ে এসেছিল। তিনি গুরুত্ব দেননি।
কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, এ বিষয়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসার পর দুই পরিবারের লোকজন ১৫ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন বলে তার কাছ থেকে সময় নেন। কিন্তু বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় মেয়েটি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা করছে।
Leave a Reply